গত কয়েকদিনের ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় পর জেঁকে বসেছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শীতের দাপট শুরু হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল থেকে বইছে উত্তরের ঠাণ্ডা বাতাস। বিভিন্ন স্থানে বইছে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ। এর মধ্যে খুলনা বিভাগে শীতের প্রকোপ একটু বেশি। দেশের কোথাও মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ চলছে। বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিন্ম তাপমাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শীত আরও ১০ দিন থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।

এদিকে, ঠাণ্ডাজনিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে। ঢাকা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে রোগী ভর্তি বেড়েছে। বৃহস্পতিবার কুড়িগ্রামে মীম নামে এক শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

১ জানুয়ারি আবহাওয়া অফিসের দেয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী জানুয়ারিতে একাধিক শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাবে। এর মধ্যে উত্তরাঞ্চলে একটি তীব্র এবং অন্যত্র ২-৩টি মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।

আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস বলেন, শীতকালে শীত থাকাটাই স্বাভাবিক। এতদিন শীত না পড়ায় মানুষ এর কারণ জানতে চেয়েছে। তিনি বলেন, ৩১ ডিসেম্বর ও এরপর রাজশাহীসহ দেশের দু-একটি এলাকায় বৃষ্টি হয়। তখন আকাশে মেঘ ছিল। সেই মেঘ চলে গেছে। এটা শীতের একটি কারণ।

তথ্য অনুযায়ী ২ জানুয়ারি থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বাদে দেশের অন্যত্র মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বইছে। ৭-৮ জানুয়ারির পর ওই দুই এলাকায়ও শীত পড়বে। সব মিলিয়ে ১৪-১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশে শীত থাকবে। একই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন স্থানে কুয়াশার প্রকোপও বাড়বে।

রাজশাহী ব্যুরো জানায়, উত্তরের জনপদে শীত জেঁকে বসেছে। বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। বৃহস্পতিবার ভোর ৬টার আগে সর্বনিন্ম তাপমাত্রা ছিল ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটিই এ মৌসুমের সর্বনিন্ম তাপমাত্রা বলে জানায় রাজশাহী আবহাওয়া অফিস। শীতের পাশাপাশি রাজশাহী অঞ্চলে ছিল কুয়াশার প্রকোপ। দুপুর ১টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। এর ফলে ভাসমান ও ছিন্নমূল মানুষ দুর্ভোগের মধ্যে পড়েন। খড়-কুটায় আগুন জ্বালিয়ে পথের ধারে শীত নিবারণ করতে দেখা গেছে ছিন্নমূল মানুষদের। নিন্ম আয়ের মানুষ শীত নিবারণের জন্য কম দামে শীতবস্ত্র কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন নগরীর ফুটপাতের ভাসমান দোকানে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগ জানায়, ঠাণ্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। অনেকে ঠাণ্ডাজনিত ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া নিয়ে হাসপাতালে আসছে।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি জানান, দু’দিনের শীতের দাপটে জেলার সব শ্রেণীর মানুষ কাবু হয়ে পড়েছেন। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় কুড়িগ্রাম হাসপাতালে মীম (দেড় বছর) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে শিশুটি আধা ঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।

দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস : পূর্বাভাস অনুযায়ী জানুয়ারিতে সারা দেশে শীতের পাশাপাশি একাধিক শৈত্যপ্রবাহ এবং মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। এ সময় দেশের উত্তরাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে একটি মাঝারি (৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) অথবা তীব্র (৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এবং অন্যত্র ২-৩টি মৃদু (৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।