এই মিষ্টির রেসিপিটি আমি তিনটি ধাপে লিখে দিলাম যাতে আপনাদের বুঝতে সুবিধা হয়। আমার টিপস গুলো ফলো করলে মিস্টি নরম হবেই। আর কখনো বানানোর পর শক্ত হয়ে যাবে না।

ছানা তৈরিঃ
উপকরনঃ
দুধ – ১ লিটার (পুর্ন ননীযুক্ত )
সিরকা – ৩ টেবিল চামচ সিরকা +৩ টেবিল চামচ পানি
ময়দা – ১ +১/২ চাচামচ
প্রনালিঃ
দুধ জ্বাল দিয়ে নিন। ফুটে উঠলে চুলা অফ করে দিন ।
ভালভাবে দুধ ফুটিয়ে নিবেন। ঘন করার দরকার নেই ।
চুলা অফ করে সিরকা আর পানি মিক্স করে অল্প অল্প করে ঢালতে থাকুন ।
সিরকা দিবেন আর চামচ দিয়ে আস্তে আস্তে নাড়তে থাকবেন ।
ছানা হয়ে গেলে ১৫-২০ মিনিট পর সামান্য গরম থাকতে ছানা পাতলা সুতির কাপড়ের উপর ঢেলে নিন ।
ভাল করে ধুয়ে নিন যাতে সিরকার ফ্লেভার না আসে ।
চিপে পানি ফেলে দিন । বেশি চাপবেন না এতে মিষ্টি শক্ত হয়ে যায় ।
ফ্যান এর নিচে ১-২ ঘন্টা ঝুলিয়ে রাখুন । ২-৩ ঘন্টা রাখলেও সমস্যা নেই। তবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে ছানা বেশি শুকিয়ে না যায় ।
১ ঘণ্টা পর ছানা ছড়ানো পাত্রে মেলে দিন ।
ফ্যানের নিচে ৭-৮ মিনিট রেখে দিন ।
বেশি ভেজা ভেজা না থাকলে ফ্যানের নিচে দেয়ার প্রয়োজন নেই ।
বাড়তি পানি শুকিয়ে গেলে ময়দা দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে হাত দিয়ে চেপে চেপে ছানাটা মিহি করে নিন ।
১০-১৫ মিনিট এভাবে করার পর আটার খামির মত হলে হাত দিয়ে চেপে চেপে শেপ ঠিক করে বল তৈরি করুন ।
কিছুর উপর রেখে বল তৈরি করলে অনেক ভাল বল হবে ।
স্পঞ্জ মিষ্টি তৈরিঃ
উপকরনঃ
চিনি – ১ কাপ
পানি- ৩ কাপ
গরম পানি – ৩/৪ কাপ
এলাচ – ১ টি
প্রনালিঃ
চিনি , এলাচ ও ৩ কাপ পানি এক সাথে বড় একটি পাত্রে নিয়ে চুলায় অল্প আচে জ্বাল দিন ।
আঁচ বাড়িয়ে দিন। চিনি গলে ফুটে উঠলে একদম কমিয়ে দিন ।
বল গুলো আস্তে আস্তে সিরাতে ছেড়ে দিন । কয়েক সেকন্ড পর ঢাকনা দিয়ে ৫ মিনিট এর জন্য ঢেকে দিন
ফুটে উঠলে জ্বাল মাঝারি আঁচের থেকে সামান্য কমিয়ে দিন । সিরা খুব গরম অথবা ফুটন্ত অবস্থায় মিষ্টির বল গুলো ছাড়বেন না ।
২০-২৫ মিনিট এভাবে ফুটাবেন । মিষ্টি নাড়াচাড়া করবেন না । (আমার ২০-২২ মিনিটের মধ্যেই হয়ে গিয়েছেল ।)
মাঝে ঢাকনা খুলে ৩/৪ কাপ পানি সিরার সাথে আস্তে আস্তে ২ থেকে ৩ বারে মিশিয়ে দিবেন ।
সিরা ঘন না হয়ে গেলে পানি মিক্স করার প্রয়োজন নেই ।আমার মিক্স করা লাগেনি ।
মিষ্টি হয়ে গেলে নামিয়ে রেখে দিন । আরেকদিকে দুধ জ্বাল দিতে হবে মালাই এর জন্য ।
মালাই তৈরিঃ
উপকরনঃ
দুধ – ১/২ কেজি
চিনি – স্বাদ অনুযায়ী
কন্ডেন্সড মিল্ক – ৩-৪ টেবিল চামচ অথবা প্রয়োজন মত
জাফরান ফুড কালার – ১ চিমটি
প্রনালিঃ
দুধ জ্বাল দিয়ে ঘন করে নিন । জ্বাল দিবার সময় বারবার নাড়বেন না । না নাড়লে দুধের উপর মালাই মানে সর পরবে ।
জ্বাল দিয়ে অর্ধেক এর সামান্য বেশি রাখুন ।
সবচেয়ে ভাল হয় একদিকে মিষ্টি সিরায় ফুটবে আরেকদিকে দুধ জ্বাল দিলে। সিরা থেকে মিষ্টি নামানোর ৪-৫ মিনিটের মধ্যে দুধে দিয়ে দিলে ভাল হয় ।
দুধ ঘন হয়ে আসলে কন্ডেন্সড মিল্ক ও জাফরান দিয়ে নাড়তে থাকুন ।
স্পঞ্জ মিষ্টি গুলো সিরা থেকে তুলে দুধের মধ্যে দিয়ে দিন ।
সব মিষ্টি এভাবে দেয়া হয়ে গেলে ৪-৫ মিনিট ফুটিয়ে চুলা থেকে নামিয়ে নিন ।
৩-৪ ঘন্টা পরে ভিতরে দুধ ঢুকে আরো নরম হয়ে যাবে ।
ফ্রিজে রাখা অবস্থায় মিষ্টি সামান্য শক্ত লাগতে পারে। বাহিরে কিছুক্ষন বের করে রাখলেই নরম তুলতুলে হয়ে যাবে ।
টিপসঃ
সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন টিপস হচ্ছে মিষ্টি ২০ মিনিট হলেই একটা টেস্ট করে দেখবেন । হয়ে গেলেই নামিয়ে নিবেন আর বেশিক্ষন জ্বাল দিবেন না। জ্বাল বেশি হলেই মিষ্টি শক্ত হয় এবং চুপসে যায় । দুধে দিয়েও বেশিক্ষন জ্বাল দিবেন না ।
রসগোল্লা চেক করার জন্য একটা রসগোল্লা বাটিতে নরমাল ডুবো পানিতে ছেড়ে দিতে হবে। যদি ডুবে যায় তবে বুঝবে হয়ে গেছে ।
সিরা বেশি ঘন হলে এবং মিষ্টি বেশিক্ষণ জ্বাল দিলে মিষ্টি শক্ত হতে পারে । তাই সিরাটা পাতলা রাখার চেস্টা করুন ।
দুধও জ্বাল দিয়ে আবার বেশি ঘন করে ফেলবেন না। তাহলে মিষ্টি শক্ত হয়ে যেতে পারে ।
মেজারমেন্ট এর কাপ দিয়ে মেপে নিতে হবে সব কিছু ।
পরিবেশনঃ
সাথে সাথে গরম গরম পরিবেশন করতে পারবেন রসমালাই ।
কিংবা ৩-৪ ঘন্টা পরে ভিতরে দুধ ঢুকে আরো নরম হলে তারপরও পরিবেশন করতে পারেন ।