গ্রামের সরল সাদাসিধে গোলগাল মেয়ে রাধা। তার বোকা বোকা ভাব, আর দুমদাম কথা বলার জন্য লোকে তাকে বেশ পছন্দ করে। বিশেষত সে যখন গোমড়ামুখো বলে তার বরকে ডাকে তখন তাকে খুব ছেলেমানুষ, ফাজিল বলেই মনে হয়। মেয়েটি কিন্তু আদপে একদমই বোকা নয়। বরং একটু বেশি হিসেবী। কথা বলার আগে অনেকবার ভাবে। কখনওই বাজে কথা বলেনা। একটু মেপেই কথা বলে সে। এই মুহূর্তে সে ধারাবাহিকের পরিচিত মুখ। অথচ তাকে এই রোলটার জন্য অনেক কসরত করতে হয়েছিল। কারণ রাধা আর এমিলার চেহারার মধ্যেতেমন কোনও মিল ছিল না। তাই নিজেকে রাধা হয়ে উঠতে খাওয়া দাওয়ার দিকেই বেশি খেয়াল রাখতে হয়েছে। কারণ আমি ততটা স্বাস্থ্য ভালো ছিল না, যতটা রাধা চরিত্রের জন্য প্রয়োজন ছিল। একটানা কথাগুলো বলে দম নিলের রাধারূপী এমিলা। হ্যাঁ এমিলাই রাধার চরিত্রে অভিনয় করে রাতারাতি স্টার হয়ে গেছে। দীর্ঘ দেড় বছর অভিনয়ের পর এবার বিরতি নিতে চলেছে এমিলা। গত সপ্তাহে ধারাবাহিকটি শেষ হল। এই মুহূর্তে আর কিছু করার কথা ভাবছে না। আপাতত তিন-চার মাস একটু গ্যাপ নিতে চাইছে। কারণ বারর পড়াশোনা এবং অবশ্যই স্লিম হয়ে পুরানো ফর্ম-এ ফিরে আসতে শরীরটাকে মেদহীন করতে চাইছে সে। রাধা আর এমিলার মধ্যে মিল অমিল দুটোই ছিল। দুজনেই খেতে ভালোবাসে। এমিলা সবাইকে বিশ্বাস করে। তবে খুব বুঝে কথা বলে। ছোটবেলা থেকে না হলেও ক্লাশ নইন টেন -এ পড়ার সময় এমিলার ইচ্ছা হয়েছিল অভিনগ করার। লেখাপড়া করতে অতটা ভালো লাগত না। সেইজন্য অভিনয়ের অনেক চেষ্টাও করেছি, কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না। দীর্ঘদিনের চেষ্টার পর প্রায় হাল ছেড়ে দিয়ে পড়াশোনায় আবার মনোনিবেশ করার কথা ভাবছি তখনই হঠাৎ সুযোগ এসে গেল ধারাবাহিকের জন্য একজন নতুন মুখ চাইছেন সুশান্তদা। সেইমতো আমি অডিশন দিই। তারপর আমাকে পছন্দ করে তিনি।

কিন্তু চ্যানেলের থেকে একটু মোটা মেয়ে চাইছিল। আমাকে তাই খেয়ে একটু মোটা হতে বললেন। মনে পড়ে প্রথম যেদিন সেটে যাই সেদিনের কথা। খুব ভয় লাগছিল তবে আনন্দও হচ্ছিল এই ভেবে যে একেবারে লিড রোলের জন্যই নির্বাচিত আমি। রাধা চরিত্রটার জন্য প্রথমদিকে চুড়িদারের নীচে আমাকে প্যাড পরতে হয়েছে। পরে তখন আমি শাড়ি পরি তখন আর অসুবিধা হয়নি। আসলে আমি মোটা হওে অতটা ছিলাম না, যতটা দেখা হয়েছে। ব্যবসায়ী পরিবারের মেয়ে এমিলা। তার বাবা -মা ও দিদি রয়েছেন। অভিনয়ে সকলেই আমাকে উৎসাহ দেন। গোখেল মেমোরিয়াল গার্লস কলেজের প্রথম বর্ষের সাইকোলজির ছাত্রী এমিলা অভিনয়ের জন্য আপাতত পড়াশোনা বন্ধ রেখেছি, তবে ভবিষ্যতে প্রাইভেটে পরীক্ষা দেবার ইচ্ছা রয়েছে। আমি অবশ্য অভিনয়ের কিছুই জানতাম না তাই শিখতে অনেকটাই সময় লেগেছে। সংলাপ মনে রাখতে পারতাম না। মাঝে মধ্যে বকুনি খেয়ে খুব অপমানিত লাগত। কিন্তু কিছু করার উপায় ছিল না। এখন পরিচিতি পাওয়ার পর ভীষণ বিশেষ ট্রিটমেন্ট পাই। অভিনেতা, বড় বড় অভিনেতারা আমাকে সহযোগিতা করেছেন। আমার স্বপ্ন শুধু টলিউড নয়, বলিউডেও কাজ করা।

- বর্তমান পত্রিকা