চিনিযুক্ত ঠান্ডা পানীয়ের ব্যাপারে আমরা সকলেই কম বেশি জানি। এ পানীয়গুলোতে থাকে উচ্চমাত্রার ক্যালরি। ৭ চা চামচ চিনির সমান এক ক্যান কোমল পানীয়। মোটা হওয়ার জন্য আমরা দায়ী করি কোমল পানীয়তে থাকা চিনিকেই। কিন্তু পানীয়র বুদবুদও কি আমাদের ক্ষতি করতে পারে? সাম্প্রতিক এক গবেষণামতে, গ্যাসভরা বুদবুদ ওঠা চিনিযুক্ত পানীয়তে ওজন তাড়াতাড়ি বাড়ে। এর তুলনায় সাধারণ চিনিযুক্ত তরল বা পানিতে ওজন বাড়ে কম। গ্যাসভরা চিনিযুক্ত কোমল পানীয়তে উচ্চ মাত্রার ক্ষুধার হরমোন ‘ঘ্রেলিন’ থাকে। যা ওজন বাড়ার সহায়ক।

এই গবেষণাটি করেছে ফিলিস্তিনের বিরজিট বিশ্ববিদ্যালয়। একই ধরণের গবেষণা করেছে মার্কিন গণমাধ্যম বিবিসির ‘ট্রাস্ট মি আই এম এ ডক্টর’ নামের স্বাস্থ্য বিষয়ক একটি দল। বিরজিট বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই গবেষণাটি করা হয়েছিল ইঁদুরের ওপর। কিন্তু এই গবেষণাটি করা হয় মানুষের ওপর। আর এ গবেষণার লক্ষ্য ছিল মানুষের ক্ষুধার ওপর কোমল পানীয়র বুদবুদের প্রভাব দেখা। চিনির প্রভাব নয়। তাদের গবেষণায় দেখা গেছে, যারা এক গ্লাস পরিমাণ বুদবুদ ওঠা চিনিযুক্ত কোমল পানীয় পান করেছেন, তাদের রক্তে ৫০ শতাংশ ঘ্রেলিনের মাত্রা বেশি পাওয়া গেছে। তাই সাধারণ পানীয়র চেয়ে বুদবুদওঠা চিনিযুক্ত পানীয় পান করলে, এক ঘন্টা পরেই মানুষ আরো ক্ষুধার্ত হয়ে ওঠে। পানীয়র বুদবুদ কেন মানুষের ক্ষুধাতে প্রভাব রাখে? এর কারণ হিসেবে গবেষণাকারী জেমস দুইটি কারণ জানান।

তিনি বলেন, একটি কারণ, কার্বোনেটেড পানীয় পান করার পরপরই পাকস্থলীতে কার্বন ডাই অক্সাইড ছড়ায়। পাকস্থলীতে কেমিক্যাল গ্রহণ করার কিছু গ্রন্থি রয়েছে। যা কার্বন ডাই অক্সাইড শনাক্ত করে। এর কারণে পাকস্থলীর ওপরের গ্রন্থিতে ‘ঘ্রেলিন’ এনজাইম নির্গত হয়। আর তা আপনাকে ক্ষুধার্ত করে তোলে। দ্বিতীয় কারণে জেমস একে শরীরের যান্ত্রিক প্রক্রিয়া হিসেবে দেখিয়েছেন। তিনি বলেন, অতিরিক্ত গ্যাসে পাকস্থলী স্ফিত হয়ে একটু প্রসারিত হয়। আর আবারো উদ্দীপক গ্রন্থিগুলো ঘ্রেলিন নির্গত করে। তাই চিনিযুক্ত পানীয়কে বিশাল ‘না’ ঘোষণা করেছে এ গবেষণা। চিনিযুক্ত বুদবুদ ওঠা পানীয়র বদলে স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসেবে সাধারণ পানি পান করারই পরামর্শ দিয়েছে গবেষকরা।