রাতের রূপচর্চা কেন জরুরীঃ
যারা সারাদিন বাইরে কাজ করেন, তাদের ত্বকে ধুলো ধোঁয়া ইত্যাদি জমা হয়। সন্ধ্যা বা রাতে বাড়ি ফেরার পর সারাদিনের জমে থাকা ময়লা এবং ব্যবহৃত মেকআপ ভালো করে ত্বক থেকে উঠিয়ে দেয়া জরুরী। মূলত এই কারণেই রাতে রূপচর্চার প্রয়োজন। অস্বাভাবিক পরিবেশ দূষণে মুখে যা ধুলাবালি জমা হয় এগুলো ত্বকে জমিয়ে রেখে দিলে ত্বকের করুন অবস্থার কথা আশা করি বলার অপেক্ষা রাখে না। ময়লা তুলে না ফেললে ত্বকের ছিদ্রগুলো বন্ধ হয়ে যাবে, ত্বক স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে পারবে না তার ফলে ব্রণ, ব্ল্যাককহেডস, হোয়াইট হেডস বা ত্বকের আরও অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। রোদ তো বটেই দিনের আলোও ত্বকের জন্য অনেক সময় ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়ায়। রাতে সে সম্ভাবনা নেই, কাজেই তখন কিছু লাগালে পরিষ্কার ত্বকের উপর তা আরও ভালোভাবে কাজ করতে পারে। ঘুমন্ত অবস্থায় মেটাবলিজমও কম হয়, ত্বক থাকে অনেক আরামে। তাছাড়া ৭-৮ ঘণ্টা টানা ঘুমানোর কারণে ক্রিম কার্যকর হবার মতো সময় পায়। যেটা দিনের বেলা হাজার কাজকর্ম হইচই; খাওয়াদাওয়ার মাঝে অসম্ভব। কাজেই ত্বকের পুষ্টি ও সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য প্রসাধন ও পরিচ্ছন্নতা রাতে করাই যুক্তিযুক্ত। তবে দিনের কাজের মাঝে সময় করে নিয়ে দুই একবার যদি মুখ পরিষ্কার করে নেওয়া যায়। তাহলে রাত্রের রূপচর্চা আরও কার্যকর হবে, এ সম্পর্কে সন্দেহ নেই।

রাতের রূপচর্চা কেমন হওয়া উচিত?
রুটিন অনেক কিছুর ওপর নির্ভরশীল। যেমন-বয়স, ঋতু, আবহাওয়া, বাতাসের আর্দ্রতা ইত্যাদি।
ত্বকঃ সুন্দর ত্বকের মূলমন্ত্রই হলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা। ‘ত্বকের ময়লা ঠিকমত পরিষ্কার করা না হলে ব্রণ হতে পারে। ত্বক হয়ে পড়ে খসখসে, রুক্ষ, অমসৃণ। তাই রাতে ঘুমানোর আগে মুখটাকে পরিষ্কার করে ঘুমালে সারা রাতের লম্বা সময় ত্বক একেবারে তরতাজা। আমাদের গরমের দেশে অতিরিক্ত ঘাম হওয়ায় ত্বক তেলতেলে ও আর্দ্র হয়ে পড়ে। এ ক্ষেত্রে মৃদু সাবান ও পানি দিয়ে মুখ ধোয়া খুব ভালো। অবশ্য শুষ্ক ত্বকে সাবানের বদলে ক্লিঞ্জিং লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে। পরিষ্কার করার জন্য ব্যবহার করা উচিত ভিজে তুলো।

ধাপ-১
প্রথমে মুখ ধুয়ে নিন আপনার ত্বকের সঙ্গে খাপ খায় এমন কোনো ফেসওয়াশ দিয়ে। স্পর্শকাতর ত্বক হলে ব্যবহার করতে পারেন ভেষজ ফেসওয়াশ।

ধাপ-২
এরপর ব্যবহার করুন ফেসপ্যাক। ঘরেই তা বানাতে পারেন। শুষ্ক ত্বকের জন্য ১ টেবিল চামচ উপটান+১ চা চামচ টকদই+১ চা চামচ দুধের সর বা দুধ।
তৈলাক্ত ও মিশ্র ত্বকের জন্যঃ ১ টেবিল চামচ উপটান+১ চা চামচ টকদই+১ চা চামচ লেবুর রস।
এগুলো একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগান। পুরোটা শুকাবেন না, অর্ধেক শুকিয়ে এলে মুখ হালকা ঘষে ধুয়ে ফেলুন। প্যাকে মেশাতে পারেন গোলাপজল, যা সব ধরনের ত্বকের জন্য ভালো।

ধাপ-৩
ময়েশ্চারাইজার হিসেবে শুষ্ক ত্বকের অধিকারীরা ভেজা মুখে স্রেফ ২-৩ ফোঁটা যে কোনো বেবি অয়েল মেখে নিন। তৈলাক্ত ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার না করাই উচিত।
রাত্রে লাগানোর ক্রিম ভিটামিন ই যুক্ত হলে উপকার হয়। কারণ ভিটামিন ই ত্বকের তারুণ্য বজায় রাখে। এছাড়া ক্রিমের মধ্যে এই ভিটামিন মেশানো থাকলে, ক্রিমটি অনেকদিন পর্যন্ত ভালো ও ব্যবহারযোগ্য থাকে। ভালো কোম্পানির ওভারনাইট ক্রিম সব বয়সের জন্যই ভালো। বিদেশী নারিশিং ক্রিম ব্যবহার করাই ভালো। বিদেশী ক্রিমে থাকে কোলাজেন ও ইলাসটিন যা ত্বকের কোষগুলোকে নতুনভাবে কার্যকর করে তোলে। এছাড়া থাকে লাইপোসোম, যা ত্বকের গভীরে গিয়ে ত্বককে প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগায়। এ রকম ক্রিম রাতে ব্যবহার করলে ত্বক ভালো থাকে।