আমাদের নিত্যদিনের দরকারি নানান অনুষংগের মাঝে বিউটি প্রডাক্টস এমনভাবে আমাদের ব্যাগে জায়গা করে নিয়েছে যে আমরা একদিনও ভাবতে পারি না এসব পণ্যের ব্যবহার ছাড়া। আমাদের অনেকেরই হয়ত ড্রেসিং টেবিল ভর্তি নানান রকম সাজ পণ্যে।

বিউটি প্রডাক্টসগুলো মোটামুটি অনেক দিন যায়। আবার নতুন শেডের লিপস্টিক বা আইশ্যাডো বাজারে আসলে সেটাও তো আমাদের ব্যাগে রাখা জরুরি, তাই না? এভাবে করে করে জমে যায় অনেক কসমেটিকস। অনেক শখ করে কেনা তাই কখনো ফেলাও হয় না। কিন্তু আপনি নিশ্চই জানেন, এসব পণ্য দীর্ঘদিন ভাল থাকলেও চিরদিন কিন্তু ভাল থাকে না।

সব ধরণের বিউটি প্রডাক্টসে মেয়াদ উল্লেখ করা থাকে না। অনেক সময় দেখে বোঝাও যায় না মেয়াদ আছে কি না। নেইলপলিশ নিচের দিকে জমে যায় দীর্ঘদিন পড়ে থাকলে। আইলাইনার, মাশকারা জমাট বেঁধে যায়। কিন্তু বাকি পণ্য। লিপস্টিক, ফাইন্ডেশন, পেনসিল কাজল এসব পণ্যে বোঝা যায় না কিছুই।কিন্তু সব পণ্যের নিশ্চই একটা মেয়াদ আছে, তাই না? দেখে যে জিনিস আপনার ব্যবহারযোগ্য মনে হচ্ছে তাই হয়ত আসলে আপনার জন্য খুবই ক্ষতিকর, রীতিমত বিষাক্ত! কীভাবে বুঝবেন মেয়াদ ফুরিয়ে গেছে কিনা? এসব পণ্যে ব্যবহৃত ক্যামিকেলের ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে বাঁচতে লক্ষ্য রাখুন এই সময় সীমা-

২-৩ মাস
পণ্য- মাসকারা, ফেস স্ক্রাব, ফেস মাস্ক, শাওয়ার পাফ

কারণ- কয়েক মাসের মধ্যেই শাওয়ার পাফের মধ্যে অনেক অনেক ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ ঘটে। ফেস স্ক্রাব এবং ফেস মাস্ক আপনি যে কনটাইনারে রাখেন সেটাও জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হতে থাকে। মাসকারার কৌটাটি আপনি যতবার খোলেন এবং লাগান ততবারই জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়।

৬-১২ মাস
পণ্য- লিকুইড আইলাইনার, ফাউন্ডেশন, কনসিলার, আই ক্রিম, সিরাম, ফেস ওয়াশ।

কারণ- ৬ থেকে ১২ মাসের মধ্যে এই পণ্যগুলো তাদের কার্যকারিতা হারাতে শুরু করে। দেখতে ঠিকঠাক আছে মনে হলেও ব্যবহারে উপকারের বদলে ক্ষতিই হতে শুরু করে। ত্বকে ব্রণ হতে পারে, ফাঙ্গাস, ডালনেস দেখা দিতে পারে।

১- দেড় বছর
পণ্য- লিপগ্লস, ক্রীম আইশ্যাডো, ফেস ক্রীম, সান্সক্রীন, সোপ, শাওয়ার জেল, আই ব্রো জেল।

কারণ- এই সময়ের মধ্যে এই পণ্যগুলো ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হতে শুরু করে। মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। তাই ব্যবহার করা যথেষ্ট ক্ষতিকর। এগুলো কার্যকারিতাও হারায়। দেখা গেল আপনি ব্যবহার করে বের হয়েছেন আর কিছুক্ষণের মাঝেই মনে হচ্ছে আপনার সব সাজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

২ বছর
পণ্য- লিপস্টিক, নেইল পলিশ, আই পেন্সিল, লিপ লাইনার, পাউডার আইশ্যাডো, পাউডার, বডি লোশন, বডি স্ক্রাব।

কারণ- আইশ্যাডো, লিপলাইনার সহ পাওডার জাতীয় সকল পণ্য তাদের কার্যকারিতা হারাতে শুরু করে ২ বছরের মধ্যে। ময়েশ্চারাইজার এবং স্ক্রাবের ব্যবহার ত্বকের জন্য অস্বস্তিকর হতে পারে। ত্বকের নানান রকম ক্ষতি হতে পারে এগুলো ব্যবহারে। বিশেষ করে যে পাফ দিয়ে আপনি পাউডার ব্যবহার করেন সেটা বদলে ফেলুন।

মেয়াদের এই সময়সীমা মেনে চললে আপনি বিউটি প্রডাক্টসের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা পাবেন। সখের জিনিস আমরা সবাই দাম দিয়েই কিনি। কিন্তু নিজেদের ত্বকের স্বাভাবিক সৌন্দর্য্য নষ্ট করে এমন জিনিস ব্যবহারের কি কোন মানে আছে? তাই মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়ে থাকলে আজই ছুঁড়ে ফেলুন পণ্যটি।