ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানে ‘কাচের বোতলে-বন্দী ভূত’ বিক্রি করার চেষ্ট করতে গিয়ে পুলিশের হাতে আটক হয়েছে চার ব্যক্তি। তার মধ্যে একজন পুলিশের গাড়ি চালক রয়েছেন। একটা সাধারণ কাচের বোতল। তার ভেতরেই নাকি রয়েছে ভূত। বায়বীয় অবস্থায় আছে, তাই দেখা যাচ্ছে না। খুব কাজের ভূত – মালিক যা বলবে, তাই-ই করবে সে। প্রমাণ চাই? তাও দিতে রাজি। ‘এক টাকার কয়েন ওই বোতলে ফেললেই নাকি সেটা ভেসে থাকবে, নীচে পড়বে না। তাহলেই বোঝা যাবে যে বোতলের ভেতরেই আছে ভূত,’ এমনটাই বলেছিল তারা। কিন্তু যেই সেই কয়েনটা ফেলা হল, ঠং করে শব্দ। বোতলের নীচে পড়ে গেল কয়েনটা। ‘কোথায় তোমাদের ভূত? কয়েন তো নীচে পড়ে গেল,’ প্রতিবাদ করেছিলেন দুজন। এঁরা এক কবিরাজের প্রতিনিধি হয়ে কলকাতা থেকে বোতলবন্দী ভূত কেনার আগে পরখ করে দেখতে গিয়েছিলেন বর্ধমান শহরে। প্রথমে একটি বিজ্ঞাপন দেখে যোগাযোগ হয়, তারপরে ফোনে ফোনেই আলোচনা হয়েছিল দুই তরফে।

দূর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে থেকে একটি পুলিশের গাড়িই তাদের বর্ধমান শহরের একটি হোটেলে নিয়ে যায় ভূত দেখাতে। হোটেলে বসেই ভূত বিক্রেতা আর ক্রেতার মধ্যে আলোচনা হচ্ছিল, দেওয়ার কথা ছিল লাইভ ডেমনস্ট্রেশান। কিন্তু ওই একটা ‘ঠং’ শব্দই পাল্টে দেয় পরিস্থিতি। ভূত যে সত্যিই নেই – সেটা বুঝে যান কলকাতা থেকে যাওয়া ক্রেতারা। তারা ভূত না কিনেই ফিরে যেতে চান। কিন্তু বিক্রেতারা নাছোড় বান্দা। তারা দাবী করে বসে যে ভূত না দেখা গেলেও দিতে হবে টাকা। এক দু টাকা নয় – পুরো পাঁচ লাখ। সঙ্গে হোটেলের থাকা খাওয়া বাবদ আরও ২০ হাজার। টাকা না পেয়ে কলকাতার বাসিন্দা তাপস রায় চৌধুরী আর বাসুদেব কুন্ডুকে আটকিয়ে রাখে চার ভূত বিক্রেতা। অভিযোগ বেশ কিছু টাকা কেড়েও নেওয়া হয়। কোনওভাবে পুলিশের কাছে খবর যায়। তারাই এসে উদ্ধার করে দুজনকে।

সঙ্গে গ্রেপ্তার হয় বিক্রেতারাও। ধৃতরা সবাই হুগলী জেলার বাসিন্দা, তাদের মধ্যে এমন একজন আছে, যে পুলিশের গাড়ি চালক। পূর্ব বর্ধমান জেলার পুলিশ বলছে লোক ঠকানোর অভিযোগে যে চার ভূত বিক্রেতাকে আটক করা হয়েছিল বৃহস্পতিবার রাতে, তাদের আদালতে তোলা হলে তারা জামিন পেয়ে গেছেন। তবে এখন থেকে সপ্তাহে দুদিন করে তাদের থানায় হাজিরা দিতে হবে। এই চক্রটি ভূত বিক্রির নাম করে আগেও লোক ঠকিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।