যে কারণেই হোক, বাচ্চার অহরহ বিছানা ভেজানোটা অনেক বাবা-মায়েরাই ঠিকভাবে নিতে পারেন না। তাই প্রায় সব বাবা-মাই দেড়-দুই মাস বয়সী বাচ্চাদেরও সময়মত উঠিয়ে উঠিয়ে প্রস্রাব করানোর অভ্যাস গড়ে তোলেন! যার ফলে শিশু বিছানা ভেজানো থেকে বিরত থাকে।

অথচ ডাক্তারিশাস্ত্র বলে, ঘুমের মাঝে শিশুদের প্রস্রাব স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া। এই বয়সের প্রস্রাব-পায়খানা নিয়ন্ত্রিত হয় মস্তিষ্ক থেকে। কারণ আড়াই-তিন বছর বয়স পর্যন্ত বাচ্চাদের স্নায়ুতন্ত্র থাকে অপরিপক্ব। ডাক্তারি ভাষায় যাকে বলে ‘নকচারনাল এনুরেসিন’।

অনেকসময় শিশুর মূত্রথলির নিয়ন্ত্রণ যদি দেরিতে প্রতিষ্ঠিত হয় তাহলে শিশু তিন বছর বয়সের পরও ঘুমের মাঝে বিছানা ভিজিয়ে ফেলতে পারে। এটা অনেকসময় বংশগতভাবে শিশুরা পেয়ে থাকে। সাত-দশ বছর বয়স পর্যন্তও অনেক শিশুর এই অভ্যাস রয়ে যায়! এই অভ্যাসের কারনে অনেক বাবা-মায়েরা শিশুদের বকবকি করেন, যার প্রভাব পড়ে শিশুর মনে। অনেক শিশু অনুশোচনায় ভোগে, তাই সে সহজে কোথাও যেতে চায় না, নিজেকে সবার কাছ থেকে দূরে দূরে রাখে।

আপনার শিশু যদি তিন বছর বয়সের পরও বিছানা ভেজায় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। সাথে কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করে আপনার শিশুকে এই অভ্যাস থেকে বের করে আনতে পারেন। চলুন জেনে নেই-

শিশুর ঘুমের মাঝে বিছানা ভেজানোর অভ্যাস থেকে থাকলে তাকে রোজ সকালে এক চামচ দারুচিনি গুঁড়ো মেশানো এক কাপ পানি পান করান। এভাবে খেতে না চাইলে বাচ্চার খাবারের সাথে মিশিয়েও খাওয়াতে পারেন। এতে অনেকখানি কাজ হবে।

এছাড়া এই অভ্যাস সারাতে মধু অতুলনীয়। ঘুমোতে যাবার আগে বাচ্চাকে এক চামচ মধু খাইয়ে দিন। যদি শুধু মধু বাচ্চা খেতে না চায়, তাহলে তরল দুধের সাথে মধু মিশিয়ে দিতে পারেন। নিয়মিত মধু খাওয়া শিশুকে অন্যান্য রোগ থেকে বাঁচিয়ে রাখার পাশাপাশি বিছানা ভেজানো থেকেও মুক্তি দিবে।

এর পাশাপাশি বাচ্চাকে বোঝান যে, এটা লজ্জার কোনো ব্যাপার নয়, অনেক বাচ্চাদেরই এমন হয়ে থাকে। আর প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।