অনেক মেয়েই বিয়ের পর মুটিয়ে যান। বলা হয়, বিয়ের পর সুখ এবং অলসতার ফল এই মুটিয়ে যাওয়া। তবে খাওয়া-দাওয়া এবং ব্যায়ামের ব্যাপারে অনিয়ম করা ইত্যাদি অনেক কারণই রয়েছে বিয়ের পর ওজন বেড়ে যাওয়ার। এই অতিরিক্ত ওজন তারা আর সহজে কমাতে পারেন না। বাড়তি ওজনের ফলে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস ইত্যাদি রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। বিয়ের আগে আকর্ষণীয় ফিগারের অধিকারী হতে অনেক মেয়ে কঠিন ডায়েট বা খাদ্যাভ্যাস মেনে চলেন।

চর্বিযুক্ত খাবার, কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার, ফাস্ট ফুড সব কিছুতেই তখন তাদের ‘না’ থাকে। ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য সব সময়ই একটা তাগিদ থাকে। তবে অনেকেই বিয়ের পর এই খাদ্যাভ্যাস আর ঠিকমতো মেনে চলতে পারেন না। ভাজা খাবার এবং তেল জাতীয় খাবার খাওয়া অস্বাস্থ্যকর।

তবে দেখা যায়, বিয়ের পর বিভিন্ন দাওয়াতে গিয়ে বা বাড়িতে অতিথি এলে এ ধরনের খাবারগুলোই বেশি খাওয়া হয়। এ কারণে ওজন দ্রুত বেড়ে যায়। আবার অনেক মেয়েই নতুন নতুন রেসিপি রান্না করে পরিবারের লোকজনকে খাওয়াতে ভালোবাসেন। এটিও ওজন বাড়ার একটি বড় কারণ। পরিবারের সবাইকে ভালো ভালো খাবার খাওয়াতে ভালোই লাগে, তবে এর মানে এই নয় যে, আপনাকেও সে সব খাবার চেখে দেখতে হবে! বিয়ের পর নতুন সম্পর্ক, নতুন মানুষজন, সব কিছুর ভিড়ে নিজের জন্য সময় বের করা বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। তখন গুরুত্ব বা অগ্রাধিকার বদলে যায়, ফলে নিজের প্রতি আর নজর দেয়া হয় না, ব্যায়াম তো দূরের কথা। বিয়ের পর মুটিয়ে যাওয়ার এটি একটি বড় কারণ। আগে হয়তো ব্যায়ামের জন্য বা স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস পালনের জন্য সময় বের করতেন, তবে বিয়ের পর এগুলো আর হয়ে ওঠে না। পরিবারের সদস্যদের সময় দিতে গিয়ে বা সংসারের কাজের ঝামেলায় নিজের জন্য আর সময়ই পাওয়া যায় না। মুটিয়ে যাওয়ার ঝুঁকির কথা ভেবে তাই নিজের জন্য সময় বের করুন। খাওয়া-দাওয়ায় নিয়ন্ত্রণ আনার চেষ্টা করুন।

বিয়ের পর মেয়েদের ওজন বেড়ে যাওয়ার আরেকটি কারণ রান্না এড়িয়ে যাওয়া এবং বাইরের খাবার খাওয়া। অনেকেই বিয়ের পর রান্নার ক্ষেত্রে অতটা পটু থাকেন না, তখন বাইরের খাবার হয় ভরসা। বাইরের খাবার বা রেস্তোরার খাবারে প্রচুর তেল দেয়া হয়। এই অস্বাস্থ্যকর খাবার ওজন বাড়িয়ে দেয়। গর্ভধারণের কারণে অধিকাংশ নারী ওজন বাড়িয়ে ফেলেন। গবেষণায় দেখা যায়, ১০ থেকে ১২ কেজি ওজন এই সময়টায় বেড়ে যায়। পিল বা ইনজেকশনের মতো জন্মনিয়ন্ত্রক পদ্ধতি গ্রহণের কারণেও বিয়ের পর মেয়েরা মোটা হয়ে যান। অনেক স্বামীই রয়েছেন, যারা বেশি সময় ধরে স্ত্রীর সঙ্গ পছন্দ করেন। যার জন্য হয়তো স্ত্রীর আর ব্যায়াম করা হয়ে ওঠে না। পরস্পরের বোঝাপড়ার জন্য এটি অবশ্যই ভালো। তবে স্বাস্থ্যকেও তো গুরুত্ব দিতে হবে। তাই স্বামীকেও উদ্বুদ্ধ করুন আপনার সঙ্গে ব্যায়াম করতে। অথবা দু’জনে একসঙ্গে কোনো জিমে ভর্তি হয়ে যেতে পারেন।