রান্না ছাড়া একদিনও চলা দায়। কিন্তু ঘরের সৌন্দর্য নিয়ে অত মাথাব্যথার সময় কোথায়। বর্ধিত জিনিস না হয় আমরা ফ্রিজে সংরক্ষণ করি। কিন্তু বিস্কুট, পানীয়, সসের ভিড়ে ভর্তি হয়ে যায় কিচেন কেবিনেট। তখন প্রয়োজনের সময় জিনিস খুজে পেতে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। কাজেই এগুলো একটু গুছিয়ে রাখলেই ঝামেলায় পড়ার হাত থেকে বাঁচা যায়। নিচে রান্নাঘরে এটা-ওটা গোছানো আর সংরক্ষণ করে রাখবার কিছু টিপস –

# রান্নার সময় ভাত, ডাল, দুধ উথলে পড়ে চুলা প্রায়ই নোংরা হয়। এক্ষেত্রে চুলা পরিষ্কারের জন্য প্রথমেই চুলার ওপর লবণ ছড়িয়ে দিন। চুলা ঠাণ্ডা হলে পরে গরম সাবান পানিতে কাপড় ভিজিয়ে জায়গাটি মুছে নিন।
রান্নাঘর আর খাবার ঘরে মাছির উপদ্রব এড়াতে নিমপাতার গোছা কয়েকটি স্থানে রেখে দিন।

# মাছ বেশি ভাজা হলে কিংবা রসুন বেশি ব্যবহার করলে পুরো বাড়িতেই দুর্গন্ধ ছড়ায়। তাই রান্না শুরুর আগেই একটা বাটিতে ভিনেগার ঢেলে চুলার কাছেই রাখুন। এটি গন্ধ শুকানোর পক্ষে আদর্শ।

# ফ্রিজে প্রায়ই দুর্গন্ধ হয়। এক্ষেত্রে ফ্রিজে একটি পাতিলেবুর টুকরো করে রেখে দিন। তাতে এটি ভেতরের যাবতীয় গন্ধ শুষে নেবে ও ফ্রিজ পরিস্কার রাখবে। এছাড়াও ফ্রিজের খাবার সবসময় ঢেকে রাখুন।

# অনেক সময় ফ্রিজে সবজি পচে দুর্গন্ধ হয়। তাই প্রতি সপ্তাহে একবার ফ্রিজ পরিষ্কার করা উচিত।

# বাসনপত্রে যদি মাছের গন্ধ হয়, তাহলে কয়েক ফোঁটা ভিনেগার ছিটিয়ে ধুয়ে নিলেই আর গন্ধ থাকবে না। আর রান্নাঘরে বা খাবার ঘরে বেশি মাছি হলে নিমপাতা থেঁতলে ওই ঘরের দু চার জায়গায় রেখে দিলে মাছি আর আসবেনা।

# মাছ-মাংস যদি ফ্রিজে বেশিদিন রাখতে হয়, তাহলে ভাল করে পানি বের করে নিয়ে তারপর প্যাকেট ভরে রাখলে অনেকদিন ভালো থাকবে।

# সেদ্ধ করার পর ডিমগুলোকে রেফ্রিজারেটরে তিন-চার দিন রাখতে চাইলে খোসা ছাড়িয়ে জলে ডুবিয়ে রেখে দেবেন। যাদের রেফ্রিজারেটর নেই তারা ডিমের উপর সরিষের তেল লাগিয়ে রাখবেন তাহলে গ্রীষ্মকালেও ডিমগুলো পাঁচ-সাতদিন ভালো থাকবে।

# লংকা, মরিচ বাটলে বা কাটলে হাত অসম্ভব জ্বালা করে। ঠান্ডা দুধের সর লাগান। জ্বালা কমে যাবে অথবা ঠান্ডা দুধ দিয়ে হাত ধুয়ে নিন। হাত পুড়ে গেলেও তক্ষুনি ঠান্ডা দুধ দেবেন, ফোস্কা পড়বেনা। আর তাতে জ্বালাও কমবে।

# স্যালাড বা অন্য কোনো ভাবে কাঁচা শাক সব্জি খেতে হলে সেগুলি ধুয়ে সমপরিমান জল ও ভিনিগার মিশিয়ে তাতে ভিজিয়ে রাখুন, খানিকক্ষণ ভেজার পর তবেই ব্যবহার করুন, এতে জীবানুমুক্ত হয়।

# একসঙ্গে অনেক রসুন ছাড়াতে ভারি বিরক্ত লাগে। আস্ত রসুন ফুটন্ত জলে মিনিট দুয়েক ভিজিয়ে হাতে ঘষলে ওপরের খোসা ছেড়ে যায়। এবার রসুন বেটে নিয়ে শিশিতে ভরে ফ্রিজে রেখে দিন। অনেক দিন ভালো থাকবে।

# অনেক সময় টক দই, বিশেষ করে পুরনো হয়ে গেলে বড্ড বেশি টক হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে দই ন্যাকড়ায় বেঁধে খানিকক্ষণ ঝুলিয়ে রাখতে হয়। তাতে দইয়ের নিজের যে জল থাকে তা ঝরে যাবে, এবার প্রয়োজনীয় মাত্রায় দুধ মেশান। টক দই আবার টাটকা ও মিষ্টি হয়ে যাবে।

# কাঁচকলা কাটবার সময় হাতে দাগ লাগে। হাতে তেল মেখে নিয়ে কাঁচকলা জলে ডুবিয়ে কাটলে দাগ পড়ে না। ঢেঁড়স কাটার বেলাতেও হাতে তেল লাগিয়ে নেওয়া ভাল। তা না হলে দাগ পড়ে ও চামড়ায় টান পড়ে।

# রান্নাঘরের সিংক কিংবা বেসিনের জিনিস আটকে প্রায়ই পানি জমে যায়, দুর্গন্ধ হয়। সে ক্ষেত্রে বাড়িতে ব্যবহার করা যায় এমন ব্লিচ দুই কাপ ঢেলে দিন সিংক কিংবা বেসিনের মুখে। এরপর একঘণ্টা ওভাবে রেপোনি ঢেলে দিন। দেখবেন সিংক কেমন পরিষ্কার হয়ে গেছে।

আজকাল অনেকেই গাছ দিয়ে ঘর সাজায়। সেক্ষেত্রেও আপনি আপনার রান্নাঘরের অব্যবহৃত কোন একটি কোণে রাখতে পারেন কোনো বনসাই গাছ। তাহলে আপনার রান্নাঘরও হয়ে উঠবে আরও অনেক স্বতন্ত্র ও নান্দনিক।