কলকাতার জনপ্রিয় সিরিয়াল টাপুর-টুপুর অভিনেত্রী সন্দীপ্তা সেন। তিনি প্রথমে দূর্গা সিরিয়াল দিয়ে তার কেরিয়ার শুরু করেন। দূর্গা অসাধারন অভিনয়ের জন্য রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। তার পরেই তিনি টাপুর-টুপুর সিরিয়াল করেন। দূর্গা দিয়ে কেরিয়ার শুরু করেছেন বলে তাকে অনেকেই দূর্গা নামে ডাকেন। কিভাবে তিনি অভিনয়ে আসলে আজ জানালেন তিনি।

নিজের নামের পরিবর্তে ‘দুর্গা’ ডাকটা কেমন লাগে?
বেশ এনজ়য় করতাম যখন ‘দুর্গা’য় অভিনয় শুরু করলাম। এখন ম্যাচিওর হয়েছি, ‘সন্দীপ্তা’ নামটা ধরে ডাকলে বেশি ভাল লাগে। আসলে আমার তো অভিনয় করার কোনও চিন্তা ত্রিসীমানায় ছিল না। কলেজে ঢুকে পড়ার পাশাপাশি একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিতে কাজ করতাম। ওই কাজ করতে গিয়েই পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর সঙ্গে আলাপ। রাজদা আমাকে পাঁচ মিনিটের একটি চরিত্রের জন্য লুক টেস্ট করাতে নিয়ে গিয়ে, ‘দুর্গা’র প্রস্তাব দেন (হাসি)। আমার একটাই উত্তর ছিল ‘না’। তখন ঠিক করে ফেলেছিলাম, আরও পড়াশোনা করব। কিন্তু রাজদা ও মণিদা (মহেন্দ্র সোনি) ‘গোল্ডেন অপরচুনিটি’ বলে এমন বোঝালেন যে, হার মানলাম।

তারপর কি পড়াশোনা ডকে উঠল? সিরিয়ালে তো দিনরাত শুটিং…
পড়া কখনও ছাড়িনি। ‘দুগার্’ করতে-করতে গ্র্যাজুয়েট হলাম। ‘টাপুর-টুপুর’ করতে-করতে এম এসসি-ও। তারপর রিহ্যাবিলিটেশন সাইকোলজি নিয়ে পড়েছি। রেজ়াল্টও মন্দ হয়নি। শটের ফাঁকে পড়তাম, মেকআপ রুমে বসে পড়তাম, যখনই সময় পেতাম, পড়তাম। এই পড়ার জন্য অনেক সময় কাজের জায়গায় লোকজনের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হয়েছে, আসলে সকলে ভেবেছেন, আমি মন দিয়ে কাজ করছি না। ছোট থেকে আমার স্বপ্ন, সাইকোলজি নিয়ে পড়ব, একটা চেম্বার করব।

স্বপ্নটি কি আর আছে?
আলবাত আছে। একটি চেম্বার খোলার প্ল্যান করছি। অভিনয় ও চেম্বার, দু’টিই সেল্ফ এমপ্লয়মেন্ট, সুতরাং না করার তো কিছু নেই।

অভিনয়ের জগতে এলে ছোটবেলার স্বপ্ন অনেকেরই উড়ে যায়…
আমার মনে হয়, পড়তে-পড়তে যাঁরা অভিনয়ে আসেন, তাঁরা অল্পদিনের মধ্যেই মান, যশ, অর্থ পেয়ে গিয়ে ভাবেন, এই বয়সে সবই তো পেয়ে গেলাম আর পড়ে কী হবে। কিন্তু এই চাকচিক্য যে কয়েকটা বছরের জন্য, তা তাঁরা ভুলে যান।

অভিনেত্রী হওয়ার পর আপনার জীবনে কোনও পরিবর্তন আসেনি?
বরাবরই আমি শৌখিন। বিভিন্ন ধরনের সানগ্লাস, পারফিউম ব্যবহার করতে ভালবাসি। আগে এগুলো বাবা-মা কিনে দিতেন। এখন আমি কিনি। এই আমার পরিবর্তন (হাসি)! বন্ধু বা পরিবারের সঙ্গে হইচই, আড্ডা, সিনেমা দেখা, শপিং, রেস্তোরাঁয় খাওয়া ইত্যাদি আগের মতো আছে। এগুলো আমার কাছে অক্সিজেনের মতো।

পুজোয় ফিতে কাটতে বা গ্রামে শো করতে যান?
যাই তো। দারুণ লাগে। স্টুডিয়োর মধ্যে কেমন কাজ করছি সেটা বোঝা যায়, যখন জনতার মধ্যে গিয়ে পড়ি। দর্শকের আসন থেকে নিজের নামটা শুনলে বেশ আনন্দ হয়। তা ছাড়া একটা ব্রেকও হয়।

আর আপনার লাভ লাইফ? এ সম্পর্কে তো মিডিয়া কিছুই জানে না…
আমিও জানি না, বিশ্বাস করুন (হাসি)। এখন আমি ফিদা রণবীর কপূরের উপর। আগে শাহিদ কপূরের অন্ধ ভক্ত ছিলাম, এখন অসহ্য লাগে! আর এত কাজের পরে আপনারাই বলুন, প্রেমিককে কখন সময় দেব? সময় না দিলে, সে তো পালাবে (হাসি)। তবে হ্যাঁ, অনেকে প্রোপোজ় করছেন কিন্তু অনেক ভেবে দেখেছি, প্রেম করার মতো ধৈর্য ঠিক আমার নেই!