ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে (আইওআর) চিনের সম্ভাব্য সাবমেরিন হামলা মোকাবিলার জন্য তৈরি হচ্ছে ভারতীয় নৌবাহিনী। নিজের কর্তৃত্ব বজায় রাখতে পরমাণু অস্ত্র ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রবাহী বিভিন্ন ধরনের সাবমেরিন দিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অস্ত্রভাণ্ডার ভরিয়ে তুলতে চাইছে নৌবাহিনী। তা ছাড়াও, নৌবাহিনী ওই এলাকায় আমেরিকা, জাপান ও অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে ঘনঘন যৌথ মহড়ায় নামবে। গোয়েন্দা সূত্রে নৌবাহিনী খবর পেয়েছে, আগামী বছরের গোড়ার দিকেই ভারত মহাসাগরীয় এলাকা অতিক্রম করবে চিনের পরমাণু অস্ত্রবাহী একটি সাবমেরিন। তার ফলে ওই এলাকায় যাতে ভারতের কর্তৃত্ব কোনও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে না যায়, সে জন্য নিজের শক্তি দেখাতে বড়সড় মহড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারতীয় নৌবাহিনী।

অস্ত্রভাণ্ডারে গুরুত্বপূর্ণ সব অস্ত্রই সেই মহড়ায় ব্যবহার করা হবে বলে বাহিনী সূত্রের খবর। ভারত মহাসাগর আর তার লাগোয়া এলাকাগুলিতে নিজের দাপট বজায় রাখতে ওই মহড়ার পাশাপাশি পরমাণু অস্ত্র ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রবাহী বিভিন্ন ধরনের সাবমেরিনে তড়িঘড়ি অস্ত্রভাণ্ডার ভরিয়ে ফেলারও প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে নৌবাহিনীতে। ধাপে ধাপে পরমাণু শক্তিতে চলা ৬টি অ্যাটাক সাবমেরিন (এসএসএন), পরমাণু শক্তিতে চলা ৪টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রবাহী সাবমেরিন (এসএসবিএন) এবং ১৮টি ডিজেল-ইলেকট্রিক সাবমেরিন নিজেদের অস্ত্রভাণ্ডারে আনতে চলেছে ভারতীয় নৌবাহিনী। সবগুলিই বিদেশি। এই মুহূর্তে নৌবাহিনীর হাতে রয়েছে ১৩টি পুরনো সাবমেরিন আর ‘আইএনএস-আরিহন্ত’ ও ‘আইএনএস-চক্র’।

পরমাণু শক্তিতে চলা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রবাহী (এসএসবিএন) ‘আইএনএস-আরিহন্ত’ দেশে বানানো। তবে সবে গত বছর বাহিনীর অস্ত্রভাণ্ডারে এসেছে ‘আইএনএস-আরিহন্ত’। আর পরমাণু শক্তিতে চলা অ্যাটাক সাবমেরিন (এসএসএন) বলতে নৌবাহিনীর হাতে সাকুল্যে যে একটি রয়েছে, সেই ‘আইএনএস-চক্র’ রাশিয়ার কাছ থেকে লিজে নেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, আন্তর্জাতিক চাপের কথা মাথায় রেখে ‘আইএনএস-চক্র’কে এখনও পরমাণু অস্ত্রবাহী করে তোলা হয়নি। তবে বাহিনী সূত্রের খবর, আগামী বছরেই একটি এসএসবিএন অস্ত্রভাণ্ডারে আসতে চলেছে। সেই এসএসবিএন ‘আইএনএস-আরিধামান’ দেশেই বানানো হচ্ছে। বিশাখাপত্তনমে ৯০ হাজার কোটি টাকার সেই সাবমেরিন বানানোর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। তা ছাড়া, ৬০ হাজার কোটি টাকারও বেশি খরচে ৬টি এসএসএন দেশেই বানানো হচ্ছে। ৪ ডিসেম্বর, নৌবাহিনী দিবসের আগে শুক্রবার নৌসেনা প্রধান অ্যাডমিরাল সুনীল লানবা বলেছেন, ‘‘এসএসএন প্রকল্প শুরু হয়ে গিয়েছে। এটা আমি শেষ করেই যাব। তা ছাড়াও আমেরিকা, জাপান ও অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে এ বার ভারত মহাসাগরীয় এলাকায় ঘনঘন যৌথ মহড়া হবে।’’