বিয়েবাড়ি মানে কি শুধু কনেরই সাজ? কে বলেছে!! কনে দেখার পরই ফোকাসটা সটান ঘুরে যায় তার পাশে বসে থাকা বোন কিংবা বান্ধবীর দিকে। সেদিনের সেকেন্ড অ্যাট্রাকশন যে সে-ই। তাই তার সাজুগুজুটা হওয়া চাই এক্কেবারে যাকে বলে ঝক্কাস। কিন্তু তেমন সাজ তো মুখের কথা নয় বাপু। শ্যামলা রং-এ কোন রং-এর ব্লাশার মানাবে কিংবা চওড়া ঠোঁটে কীভাবে লিপস্টিকটা লাগাব…এইরকম খুঁটিনাটি সম্পর্কে ফান্ডা না থাকলে, ফ্যাব সাজতে গিয়ে উলটে ফ্রাস্টু খেয়ে যাব। তাই এ ধরনের গন্ডগোল যাতে না করে বসি, তাই সাজের সাতকাহনে একবার চোখ বুলিয়ে নিই।

বেস মেকআপ

এটি মেকআপের প্রথম ধাপ। শীতকালে ত্বক শুকনো হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে, তাই মুখ পরিষ্কার করে প্রথমে ময়শ্চারাইজ়ার লাগিয়ে নিতে হবে। অয়েলি স্কিন হলে অয়েল ফ্রি ময়শ্চারাইজ়ার লাগাব। তারপর কমপ্লেকশন অনুযায়ী ফাউন্ডেশন বা কমপ্লেকশনের চেয়ে এক শেড ডার্ক রং-এর ফাউন্ডেশন (বিশেষ করে শ্যামলা ত্বকে) লাগিয়ে খুব ভাল করে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। এবার কমপ্যাক্টের পালা। যদি মুখে কালচে ছোপ বা কোনও দাগ কিংবা ব্রণ থাকে, তা হলে কমপ্যাক্ট লাগানোর আগে কনসিলার দিয়ে ওই দাগ আড়াল করে ফেলব, তারপর বুলিয়ে নেব কমপ্যাক্ট।

ব্লাশ অন

মুখের শেপ অনুযায়ী ব্লাশার লাগাতে হবে। মুখ ভারী হলে ব্রাউন বা কপার কালারের ব্লাশার লাগাব। কিন্তু হালকা মুখে অর্থাত্‌ গাল ভারী না হলে পিচ, পিঙ্কের মতো হালকা রঙের ব্লাশার চলতে পারে। ব্লাশার লাগানোর সময় গালটা ভিতরের দিকে টেনে রাখব। এবং ব্লাশারের টান হবে নীচ থেকে উপরের দিকে।

চোখের মেকআপ

আই ব্রো হালকা হলে ব্রাউন রং-এর আইশ্যাডো বা আই ব্রো আঁকার পেনসিল দিয়ে ভুরু আরও প্রমিনেন্ট করে নেব। যে রঙের পোশাক পরব, সেই রঙের অথবা মানানসই অন্য রঙের আইশ্যাডো পরব। তবে যদি চোখ ছোট হয়, তা হলে ডিপ রঙের আইশ্যাডো লাগালে চোখ আর-ও ছোট লাগবে। তাই হালকা রং-এর আইশ্যাডো লাগানোই ভাল। চোখের বাইরের দিকে (অর্থাত্‌ নাক ঘেঁষে নয়) ব্রাউন রং-এর আইশ্যাডো লাগিয়ে স্মাজ করে দিলে চোখ আরও বড় লাগে। চোখের বাকি মেকআপ অর্থাত্‌ আইলাইনার, মাসকারা, কাজল লাগানোর আগে আইশ্যাডো লাগিয়ে নিতে হবে। এগুলো লাগানোর পরে আইশ্যাডো লাগালে তা স্মাজ করে যাওয়ার ভয় থাকে। চোখ বড় হলে চোখের নীচের লাইনে কাজল পরব। খেয়াল রাখব, কাজলের মুখ যেন ভোঁতা হয়। চোখের ভিতরের দিকে কাজল পরব এবং কাজলের টান হবে বাইরের থেকে ভিতরের দিকে। তারপর আইলাইনার ও মাসকারা লাগিয়ে নেব। আইলাইনার পরার সময় খেয়াল রাখব, তা যেন খুব সরু বা মোটা না হয়। চোখের নীচের লাইন বরাবর হোয়াইট কোহল ব্যবহার করব এবং চোখের বাইরের দিকে কাজল লাগাব। সবশেষে চোখের পাতায় লাগাব মাসকারা।

ঠোঁটের মেকআপ

প্রথমে আসি সরু ও পাতলা ঠোঁটে কীভাবে লিপস্টিক পরব, সেই প্রসঙ্গে। প্রথমে ঠোঁটের বাইরে একটু চওড়া করে লিপ লাইনার দিয়ে ঠোঁট এঁকে নিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, ঠোঁটের রং-এর সঙ্গে লিপ লাইনারের রং-এর যেন বিরাট ফারাক না থাকে। এতে লিপ লাইন কৃত্রিম নয়, স্বাভাবিক মনে হবে। লিপ লাইনিংয়ের পর ঠোঁটে চ্যাপস্টিক স্টাইলের লিপবাম লাগাব। এর পর স্কিনটোনের সঙ্গে মানানসই রং-এর লিপস্টিক লাগিয়ে নেব। লিপস্টিকের পর লিপ গ্লসের পালা। এবং অবশ্যই তা যেন শাইনি হয়। বাকি অংশের তুলনায় ঠোঁটের মাঝখানে গাঢ় করে গ্লস লাগাতে হবে। এতে ঠোঁট ভরাট লাগে। পাতলা ঠোঁটে কখনওই খুব গাঢ় রং-এর লিপস্টিক বা লিপ লাইনার ব্যবহার করা উচিত নয়। আর লিপস্টিক ও লিপলাইনারের রং এক হওয়া বাঞ্ছনীয়। ঠোঁট যদি মোটা ও চওড়া হয়, তা হলে ঠোঁটের ভিতরের দিকে লিপ লাইনার দিয়ে আউটলাইন এঁকে নিয়ে লিপস্টিক পরব। মোটা ঠোঁটে গাঢ় রং-এর লিপস্টিক পরলে ঠোঁট ছোট ও পাতলা দেখায়। লিপস্টিক যাতে বেশিক্ষণ স্টে করে, তার জন্য প্রথমে এক কোট লাগিয়ে তার উপর টিসু চেপে রেখে আরও একবার লিপস্টিক লাগিয়ে নেব। লিপস্টিকের রং যেন অবশ্যই পোশাকের সঙ্গে মানানসই হয়। যদি সেই রং-এর লিপস্টিক না থাকে, তা হলে একটা ছোট্ট টোটকা বলে রাখি, প্রথমে যে কোনও রং-এর লিপস্টিক ঠোঁটে লাগিয়ে তার উপর যে রং-এর পোশাক পরব সেই রং-এর আইশ্যাডো লাগিয়ে নেব। ব্যস, আমিও পেয়ে যাব আমার মনের মতো রং-এর লিপস্টিক।