মেছতার কারণ
১। মেছতার প্রধান এবং মূল কারন হল সূর্যের আলো। কোন প্রতিরক্ষা ছাড়াই অতিরিক্ত সূর্যের আলোতে গেলে এটি হতে পারে।

২। জন্ম নিয়ন্ত্রের পিল খেলে

৩। থাইরয়েড সমস্যা

৪। হরমোনের তারতম্য

৫। বংশগত কারণে

৬। ত্বক নিয়মিত ভালভাবে পরিষ্কার না করলে

৭। অতিরিক্ত চিন্তা, কাজের চাপ, কম ঘুম ইত্যাদি।

এই সকল কারণে সাধারণত মেছতা হয়ে থাকে। এছাড়া আরোও অনেকে কারণে মেছতা হতে পারে। স্কিন ট্রিটমেন্ট, ক্রিম ছাড়াও ঘরোয়া কিছু উপায়ে এই দাগ দূর করা সম্ভব। আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক মেছতা দূর করার সহজ এবং কার্যকরী ২টি প্যাকের কথা।

১। লেবুর রস
লেবুর রসে আছে ত্বক ব্লিচিং করার উপাদান যা ত্বকের যে কোনো প্রকার দাগ দূর করে থাকে। এছাড়া লেবুর রস ব্যবহারে ত্বক নরম কোমল হয়ে উঠে।

ত্বকে কালো বা খয়েরী দাগে আক্রান্ত জায়গায় লেবুর রস দিয়ে দিন। ৩০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি প্রতিদিন করুন। ২ মাসের মধ্যে আপনি পার্থক্য দেখতে পারবেন। সেনসিটিভ ত্বকের অধিকারীরা সরাসরি লেবু ব্যবহার না করে সাথে মধু ও গোলাপ জল মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
আরেকভাবে লেবুর রস ব্যবহার করা যেতে পারে। লেবুর রসের সাথে পরিমাণ মতো চিনি মিশিয়ে পেষ্ট তৈরি করে নিন। এবার পেস্টটি ত্বকে না মিলে যাওয়া পর্যন্ত ঘষুন। বিশেষ করে ত্বকের খয়েরী দাগের জায়গাগুলোতে ভাল করে ম্যাসাজ করে নিন। ৫-১০ মিনিট পর পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এটি সপ্তাহে কয়েকবার করুন। আপনি চাইলে এতে অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিতে পারেন।
২। চন্দন
চন্দনে অ্যান্টি এইজিং এবং অ্যান্টিসেপটিক উপাদান আছে যা ত্বকের হাইপারপিগমেনশন কমিয়ে মেছতার দাগ দূর করে থাকে।

২ টেবিল চামচ চন্দনের গুঁড়া, ১ টেবিল চামচ গ্লিসারিন, এবং লেবুর রস দিয়ে একটি প্যাক তৈরি করে নিন। এবার এই প্যাকটি কালো বা খয়েরী দাগের ওপর লাগান। কিছুক্ষণ পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে কয়েকবার এটি করুন।
১ টেবিল চামচ কমলার রস, ১ চা চামচ লেবুর রস, ভিটামিন ই, ২ টেবিল চামচ চন্দন গুঁড়া মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। ভাল করে এই প্যাকটি মুখে লাগান। আধা ঘন্টার পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুইবার এটি ব্যবহার করুন। আর দেখুন পার্থক্য।
প্রতিরাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে চন্দন পাউডার, অলিভ অয়েল, বাদাম অয়েল মিশিয়ে মুখে ম্যাসাজ করতে পারেন। সারারাত রেখে সকালে ঘুম থেকে উঠে ধুয়ে ফেলুন।

এছাড়াও আরও দেখতে পারেন ...

দারুচিনি ও দুধের সরঃ

এক চিমটি দারুচিনি গুড়ো এবং সামান্য দুধের সর হাতের তালুতে আঙুল নিয়ে ভালো করে মেশান। এরপর এই মিশ্রণটি মেছতার দাগের ওপর লাগান। এরপর ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে শুকিয়ে এলে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে আলতো ঘষে তুলে ফেলুন। এটি প্রতদিন ঘুমানোর আগে ব্যাবহার করলে ভালো ফল পাবেন।

ছোলার ডালঃ

যাদের মুখে বয়সের জন্য মেছতা পড়ে তারা ছোলার ডাল ব্যাবহার করে অনেক উপকার পেতে পারেন। এজন্য প্রথমে ছোলার ডাল সারাদিন ভিজিয়ে রেখে দিন। এরপর আধা কাপ ছোলার ডালের সাথে ১ চামুচ মধু মিশিয়ে পানির পরিবর্তে কাচা দুধ দিয়ে মিহি করে ব্লেন্ড করে নিন। এবার এটি সম্পুর্ন মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট পর মুখ ধুয়ে ফেলুন। এটি মেছতার সাথে সাথে ত্বকের রিঙ্কেলস দূর করতেও সাহায্য করে।

লেবুর রস ও চিনিঃ

প্রথমে একটা লেবু চিপে নিয়ে তা পরিষ্কার তুলা দিয়ে সরাসরি মেছতার উপর লাগিয়ে নিন। এরপর ১৫ মিনিট পর আরেক টুকরা লেবুর উপর আধা চামুচ চিনি ছড়িয়ে নিয়ে মেছতার উপর হালকা করে ৫ মিনিট ঘষে নিন। এরপর ঠান্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে নিন। এটি প্রতিদিন ব্যাবহারে দ্রুত মেছতা দূর হয়।

টক দইঃ

মুখের মেছতা দূর করতে টকদই এর বিকল্প নেই। ২ চামুচ টকদই এর সাথে আধা চামুচ মধু মিশিয়ে পেষ্ট তৈরী করে নিন। এবার এটি মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর ঠান্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে নিন। এটি সপ্তাহে ৪ দিন ব্যাবহারে খুব দ্রুত ফলাফল পাওয়া যায়।

টমেটোঃ

টমেটোর ভিটামিন সি মেছতা দূর করতে অনেক উপকারী। একটা টমেটো কেটে মেছতার অংশটুকু প্রতিদিন ৫ থেকে ৮ মিনিট ম্যাসাজ করুন। এতে মেছাতা খুব দ্রুত হালকা হয়।

এলোভেরাঃ

এলোভেরার পাল্প ত্বকের দাগ দূর করতে অনেক উপকারী। একটি এলোভেরা কেটে এর জেলো এক চামুচ মধুর সাথে মিশিয়ে মেছতার উপর লাগিয়ে নিন। এবার ২০ মিনিট পর হালকা আঙ্গুল দিয়ে ঘষে কুসুম গরম পানিতে মুখ ধুয়ে নিন।