নিজেকে সুন্দর করে সাজাতে প্রায় সব নারীই কমবেশি মেইকআপ ব্যবহার করে থাকেন। তবে মেইকআপ করতে গিয়ে যদি সামান্য কিছু ভুল হয়ে যায় তাহলে উদ্দেশ্য পূরণ না হয়ে বরং উল্টোটাই হতে পারে। মেকআপ দিয়ে কীভাবে আরও সুন্দর করে তোলা যায় এমন কিছু সহজ কৌশলও জানা নেই অনেকের। আসুন জেনে নেই মেকআপ সুন্দর করার সহজ কিছু কৌশল –

*পেন্সিল আই-লাইনার থেকে জেল লাইনার
মেইকআপ প্রেমীদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে আছে জেল আইলাইনার। এর দাম তুলনামূলক বেশি। চাইলে বাজারে সহজলভ্য এবং স্বল্পমূল্যের পেন্সিল লাইনারকেও জেল আইলাইনারে রূপান্তর করা সম্ভব। মেকআপ করার কিছু গোপন কিন্তু সহজ ট্রিকস জেনে নিন
বাজারে বিভিন্ন রংয়ের পেন্সিল-কাজল পাওয়া যায়। পছন্দ অনুযায়ী যে কোনও রংয়ের একটি পেন্সিল-কাজল ১ সেকেন্ড সময়ের জন্য আগুনে রাখার পর ১৫ সেকেন্ড অপেক্ষা করতে হবে। পেন্সিলটি কিছুটা ঠান্ডা হওয়ার পরই এটি জেল-লাইনারের মতো কাজ করবে।

*আই-শ্যাডোর আগে সাদা লাইনারের ব্যবহার
হালকা রংয়ের আই-শ্যাডো আরও উজ্জ্বল দেখাতে শ্যাডো লাগানোর আগে চোখের পাতার উপর সাদা লাইনার লাগানো যেতে পারে। সাদা লাইনার লাগিয়ে আঙুল দিয়ে তা চোখের পাতার উপর ছড়িয়ে দিতে হবে। এর উপর পছন্দের শ্যাডো লাগালে মনমতো শেইড পাওয়া যাবে। 

*আই-লাইনার দেওয়ার সহজ উপায়
দুই চোখেই সমানভাবে আইলাইনার দিতে অনেকেরই বেগ পেতে হয়। তবে সাধারণ একটি চামচ ব্যবহার করলেই সহজেই দুচোখে সমানভাবে টেনে আইলাইনার দেওয়া সম্ভব। মেকআপ করার কিছু গোপন কিন্তু সহজ ট্রিকস জেনে নিন প্রথমে চোখের বাইরের কোণায় চামচের হাতলটি কোণাকোণি ধরে আইলাইনার বা কাজল দিয়ে একটি সোজা রেখা টানতে হবে। তারপর চামচের উপরের গোলাকার অংশটি এর উপর ধরে আগে আঁকা রেখাটির সঙ্গে মিলিয়ে একটি দাগ টানতে হবে। এরপর মাঝের অংশটি ভরাট করে দিলেই ‘ক্যাটস আই’ বা ‘উইঙ্গড আই’ হয়ে যাবে।

*স্মোকি আই
চোখের হালকা মেইকআপের মধ্যে বর্তমানে সবচাইতে জনপ্রিয় হল ‘স্মোকি আই’। স্মোকি আই করতে চোখের পাতার উপর বাইরের দিকের কোণায় একটি হ্যাসট্যাগ আঁকতে হবে। তারপর হাত দিয়ে হালকা করে হ্যাশট্যাগটি ভিতরের দিকে এবং বাইরের দিকে কৌণিকভাবে মিলিয়ে দিতে হবে। তাহলেই হয়ে যাবে স্মোকি আই। 

*চোখের পাতার উপর মাস্কারার দাগ এড়ানোর উপায়
চোখের উপরের বা নীচের পাপড়িতে মাস্কারা লাগাতে গেলে প্রায়ই চোখের পাতায় লেগে যায়। তাই মাস্কারা লাগানোর সময় চোখের পাতায় একটি চামচ বা অপ্রয়োজনীয় ভিসিটিং কার্ড ধরে তারপর স্বাভাবিক নিয়মে মাস্কারা লাগালে পাতার উপর মাশকারা লেগে যাবে না। একইভাবে নীচের চোখের পাপড়িতেও মাসকারা লাগানো যায়। 

*চোখের পাতা ‘কার্ল‘ করতে
চোখ ড্রামাটিক করে তুলতে বাঁকানো চোখের পাতার জুরি নেই। আইল্যাশ কার্লার হালকা গরম করে নিলেই চোখের পাতা খুব সহজে দীর্ঘ সময়ের জন্য কার্ল করা যায়। মেকআপ করার কিছু গোপন কিন্তু সহজ ট্রিকস জেনে নিন প্রথমে আই-ল্যাশ কার্লারটি হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে হালকা গরম করে নিতে হবে। তারপর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে গরম ল্যাশ কার্লারটি চোখের পাতা বাঁকা করতে ব্যবহার করা যাবে।

*ফেইক আই-ল্যাশে আঠা লাগাতে ববি পিন
চোখ বড় দেখাতে এবং আকর্ষণীয় করে তুলতে ফেইক আই-ল্যাশ ব্যবহার করা হয়। তবে আই-ল্যাশ চোখে লাগানোর আগে সঠিকভাবে আঠা না লাগালে সৌন্দর্য বাড়ানোর বদলে চোখের পাতার ক্ষতি করতে পারে। তাই ফেইক-ল্যাশে নিখুঁতভাবে আঠা লাগাতে ববি পিন ব্যবহার করা যেতে পারে। ববি পিনের চিকন অংশ দিয়ে নিখুঁতভাবে আঠা লাগানো যায়। 

*লিপস্টিকের স্থায়িত্ব বাড়াতে
অনেক সময় লিপস্টিক লাগানোর কিছুক্ষণ পরেই রং হালকা হয়ে যায়। দীর্ঘক্ষণ রং ধরে রাখতে লিপস্টিক লাগানোর পর ঠোঁটের উপর আলতো করে একটি টিস্যু পেপার ধরে তার উপর একটি ব্রাশ দিয়ে পাউডার লাগিয়ে নিতে হবে। তাহলেই লিপস্টিকের রং অনেক সময় স্থায়ী হবে। লিপগ্লস তৈরি করেও নিতে পারেন। সবসময় সব ধরনের রংয়ের লিপগ্লস রাখা সম্ভব নয়। তাই পছন্দের রংয়ের আই-শ্যাডো পেট্রোলিয়াম জেলি বা লিপবামের সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে লিপগ্লস।

*চোখের কালি ঢাকতে কন্সিলার ব্যবহার
চোখের নীচের কালি ঢাকতে ফোটা ফোটা করে কন্সিলার লাগিয়ে থাকেন অনেকেই। তবে সরাসরি চোখের নীচের কালির উপর একটি ব্রাশ দিয়ে ত্রিভুজাকারে কন্সিলার লাগালে নিখুঁত ফিনিশিং পাওয়া যায়। এতে করে চোখের নীচে বা আশপাশে লালচেভাব থাকে না এবং ত্বক উজ্জ্বল দেখায়। অবশ্য কন্সিলার স্পঞ্জ দিয়ে হালকা চেপে মুখের মেইকআপের সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে।

*কাউন্টারিং করার সহজ পদ্ধতি

মেইকআপ করার পর ত্বকের শেইপ নিখুঁত করতে ব্রোঞ্জার ব্যবহার করে কাউন্টারিং করতে হয়। ত্বকের স্বাভাবিক রংয়ের থেকে দুই-তিন শেইড গাঢ় ফাউন্ডেশন বা ব্লাশের সাহায্যে কাউন্টারিং করার সময় অনেকেই ব্রোঞ্জার লাগানোর সঠিক জায়গা খুঁজে পান না।
এক্ষেত্রে চিক-বোনের ঠিক নীচেই পেন্সিল, কলম বা মেইকআপ ব্রাশ ধরে ঠোঁটের কোণা থেকে কান পর্যন্ত সঠিক কোণ খুঁজে বের করে সেখানে কাউন্টারিং ব্রাশ দিয়ে ব্রোঞ্জার লাগিয়ে ভালোভাবে ত্বকের সঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে। এতে করে ত্বক স্বাভাবিক দেখাবে।