মেহেদীর রঙ রাঙ্গা হাত যেন ঈদের পরিপূর্ণতা নিয়ে আসে। ঈদের চাঁদ দেখার সাথে সাথেই মেয়েদের হাতে মেহেদী লাগানোর ধুম পড়ে যায়। ঈদের আগের রাতে মেহেদী নিয়ে বাড়ির ছোট-বড় সকলের ছুটোছুটি করা প্রাচীনকাল থেকেই চল হয়ে উঠেছে।

বর্তমানে বাজারে রয়েছে অসংখ্য প্রক্রিয়াজাত মেহেদী। সূক্ষ মেহেদীর ডিজাইনের জন্য বাজারের প্রক্রিয়াজাত কৃত মেহেদী বেশ জনপ্রিয়। বিভিন্ন কোন ও টিউবে এসকল মেহেদী পাওয়া যায়। এসকল মেহেদীর মাঝে রয়েছে লাল, সবুজ , বেগুনী সহ আরো অনেক কালার।অনেক মেহেদীই আবার ৫-১০ মিনিটেই গাঢ় মেহেদীর রঙ এনে দেয়। চাইলে পার্লারে অথবা ঘরে বসেই মনের মত করে রাঙ্গিয়ে নিতে পারেন আপনার হাত।

পার্লারে দুই হাত ভরে মেহেদী লাগাতে সাধারণত ১০০০-২০০০ টাকা লাগবে। হাতের এক তালুতে সাধারণ মেহেদী নকশা করাতে পারেন ১৫০-২০০ টাকায়। মেহেদী মেহেদীর রঙ গাঢ় না হলে অনেকেই মন মরা হয়ে পরেন। তাই মেহেদী লাগানোর সময় একটু যত্নশীল হলে আপনি মনের মত গাঢ় রঙ পেতে পারেন। আপনি যে কোম্পানীর মেহেদী কিনেছেন তা আপনার ত্বকে মানানসই কিনা। এজন্য মেহেদী লাগানোর ২৪ ঘন্টা আগে হাতের তালুতে একটু মেহেদী কিছুক্ষণ লাগিয়ে তুলে ফেলুন। ২৪ ঘন্টার মাঝে জ্বালাপোড়া বা কোন প্রদাহ দেখা না গেলে মেহেদী লাগাতে পারেন।

মেহেদী লাগানোর আগে হাত ভালো করে সাবান দিয়ে ধুয়ে শুকিয়ে নিন। পরিষ্কার শুষ্ক হাতে মেহেদীর রঙ সহজেই শোষিত হয়। ফলে রঙ্গো গাঢ় হয়। মেহেদী লাগানোর সময় সাথে পুরাতন কাপড় বা টিস্যু রাখুন। যাতে মেহেদী ছড়িয়ে গেলে সাথে সাথে মুছতে পারেন। হাতে মেহেদী লাগানোর পর তা দ্রুত শুকানোর জন্য বাতাস করবেন না। অথবা হাত ফ্যান এর কাছে নিয়ে রাখবেন না। স্বাভাবিক নিয়মে মেহেদী শুকাতে দিন।
সাধারণত মেহেদী সারারাত হাতে রেখে দিলে রঙ গাঢ় হয়। কিন্তু বাজারের বিভিন্ন এক্টিভ গোল্ড মেহেদী গুলো সারারাত হাতে দিয়ে রাখবেন না। মেহেদী শুকাতে থাকতে কিছুটা চিনি ও লেবুর রস মিশিয়ে একটু একটু করে মেহেদীর উপর লাগান। এতে মেহেদীর রঙ আরো গাঢ় হবে।

মেহেদী পুরোপুরি শুকিয়ে গেলে সাথে সাথেই হাত ধুয়ে ফেলবেন না। প্রথমে মেহেদীর অবশিষ্ট কণা গুলো শুকনো কাপড় দিয়ে তুলে ফেলুন। ২-৩ ঘন্টার মাঝে হাত ভিজাবেন না। হাত পানি দিয়ে ধোয়ার পর খানিক্টা সরিষার তেল হাতে লাগিয়ে রাখুন। এতে মেহেদীর রঙ আরো বাড়বে। যারা বাড়িতেই মেহেদী বেটে হাতে লাগাবেন, তারা মেহেদী বাটার সময় সামান্য পরিমাণ খয়ের সাথে বেটে নিতে পারেন। এতে মেহেদীর রঙ গাঢ় খয়েরী হয়। ঈদের দিন মেহেদীর কারূকাজের সাথে মিল রেখে হাতে গ্লিটার এর নকশা করতে পারেন। এতে হাতের মেহেদী আরো সুন্দর দেখাবে।