24 Live Bangla News

উচ্চতা অনুযায়ী আদর্শ ওজন কতো হওয়া উচিত ?

আদর্শ ওজন নির্ণয়ের পদ্ধতিতে একজন ব্যক্তির ওজন কিলোগ্রামে মাপা হয় এবং উচ্চতা মিটারে মাপা হয়। এবার ওজনকে উচ্চতার বর্গফল দিয়ে ভাগ করা হয়। এই ভাগফলকে বলে বিএমআই। বিএমআই ১৮ থেকে ২৪-এর মধ্যে হলে স্বাভাবিক। ২৫ থেকে ৩০-এর মধ্যে হলে স্বাস্থ্যবান বা অল্প মোটা, ৩০ থেকে ৩৫-এর মধ্যে হলে বেশি মোটা। আর ৩৫-এর ওপরে হলে অত্যন্ত ও অসুস্থ পর্যায়ের মোটা বলা যেতে পারে।

অতিরিক্ত ওজন কিংবা অতি কম ওজন কারোই কাম্য নয়। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন বেঁটে কিন্তু মোটা, আবার অনেকে খুব লম্বা কিন্তু যেন তালপাতার সেপাই। এরকম অবস্থা মানে উচ্চতা অনুযায়ী তাঁদের ওজন ঠিক নেই। আপনার ওজন বেশি না কম, নাকি তা ঠিকই আছে তা বুঝতে হলে জেনে নিন উচ্চতা অনুযায়ী আপনার ওজন কতো-

উচ্চতা | পুরুষ(কেজি) | নারী(কেজি)
►৪’৭” —— ৩৯-৪৯ —– ৩৬-৪৬
►৪’৮” —— ৪১-৫০ —– ৩৮-৪৮
►৪’৯” —— ৪২-৫২ —– ৩৯–৫০
►৪’১০” —— ৪৪-৫৪ —– ৪১–৫২
►৪’১১” —— ৪৫-৫৬ —– ৪২-৫৩
►৫ফিট —— ৪৭-৫৮ —– ৪৩-৫৫
►৫’১” —— ৪৮-৬০ —– ৪৫-৫৭
►৫’২” —— ৫০-৬২ —– ৪৬-৫৯
►৫’৩” —— ৫১-৬৪ —– ৪৮-৬১
►৫’৪” —— ৫৩-৬৬ —– ৪৯-৬৩
►৫’৫” —— ৫৫-৬৮ —– ৫১-৬৫
►৫’৬” —— ৫৬-৭০ —– ৫৩-৬৭
►৫’৭” —— ৫৮-৭২ —– ৫৪-৬৯
► ৫’৮” —— ৬০-৭৪ —– ৫৬-৭১
► ৫’৯” —— ৬২-৭৬ —– ৫৭-৭১
►৫’১০” —— ৬৪-৭৯ —– ৫৯-৭৫
►৫’১১” —— ৬৫-৮১ —– ৬১-৭৭
►৬ ফিট —— ৬৭-৮৩ —– ৬৩-৮০
►৬’১” —— ৬৯-৮৬ —– ৬৫-৮২
►৬’২” —— ৭১-৮৮ —– ৬৭-৮৪

শরীর অতিরিক্ত রুগ্ন হলে দেখতে খারাপ তো লাগেই, সাথে চেহারায় দ্রুত বলিরেখা পড়ে। অতি রুগ্ন মানুষ অপুষ্টির শিকার। ফলে পুষ্টি জনিত নানাবিধ রোগ, যেমন- অ্যানিমিয়া বা রক্ত শুন্যতা, শারীরিক দুর্বলতা, নানান রকম চর্মরোগ ইত্যাদি হওয়ার প্রবল সম্ভাবন থাকে। অপুষ্টির শিকার হলে চুল পড়ে যাওয়া, দাঁত নষ্ট হয়ে যাওয়া, হাড় খয়ে যাওয়া সহ নানা রকম রোগ হতে পারে।

আবার শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমার ফলে মানুষ মোটা হয় বা ভুঁড়ি হয়। ফ্যাট সেল বা চর্বিকোষ আয়তনে বাড়ে তখন শরীরে চর্বি জমে। পেটে, নিতম্বে, কোমরে ফ্যাট সেল বেশি থাকে। অতিরিক্ত খাওয়ার জন্য দেহে চর্বি জমে, আবার যে পরিমাণ খাওয়া হচ্ছে বা দেহ যে পরিমাণ ক্যালরি পাচ্ছে সে পরিমাণ ক্ষয় বা ক্যালরি খরচ হচ্ছে না-এ কারণেও দেহে মেদ জমতে পারে। এগুলো শোনার বা জানার পর অনেকে হয়তো বলবেন, সঠিক পরিমাণে খাদ্য গ্রহণের পরও ওজন বেশি। তাদের অভিযোগ সঠিক। বংশগত কারণেও মানুষ মোটা হতে পারে।

মদ্যপান, অতিরিক্ত ঘুম, মানসিক চাপ, স্টেরয়েড এবং অন্য নানা ধরনের ওষুধ গ্রহণের ফলেও ওজন বাড়তে পারে। বাড়তি ওজন কিংবা ভুঁড়ি নিয়ে অনেক সমস্যা। বাড়তি ওজনের জন্য যেকোনো ধরনের হৃদরোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া রক্তনালিতে চর্বি জমে নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়। বাড়তি ওজন রক্তচাপেরও কারণ।ডায়াবেটিস টাইপ-২ দেখা দিতে পারে মেদ বৃদ্ধির জন্য। মেদবহুল ব্যক্তির জরায়ু, প্রস্টেট ও কোলন ক্যান্সারের সম্ভাবনা শতকরা ৫ ভাগ বেশি।

ওজন বৃদ্ধির সাথে সাথে হাঁটাচলা করতে সমস্যা হয়। হাঁটুর সন্ধিস্থল, কার্টিলেজ, লিগামেন্ট ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। আর্থ্রাইটিস, গেঁটে বাত এবং গাউট হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। অতিরিক্ত চর্বি থেকে পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।

সব মিলিয়ে বলা যায়, অতিরিক্ত কম ওজন বা অতিরিক্ত বেশি ওজন- দুটোই সুস্থতার বিপরীত। নিজের আদর্শ ওজন নির্ণয় করুন, এবং আপনার অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ওজনকে আদর্শ অবস্থানে আনবার জন্য চেষ্টা করুন। কেবল সুন্দর থাকা মানেই ভালো থাকা নয়, সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকাই সত্যিকারের ভালো থাকা।

Read More Bangla News