অয়েল ম্যাসাজ খুব উপকারী আমাদের মাথার পাতলা চুল মোটা বা ঘন করার জন্য। অয়েল ম্যাসাজের ফলে স্ক্যাল্পে রক্ত চলাচল বেড়ে যায়। ফলে মাথায় নতুন চুল গজায়। আজ আমি আপনাদের ৫ টি খুব উপকারী হেয়ার অয়েলের কথা বলবো যা আপনি বাড়িতেই বানিয়ে ফেলতে পারবেন, এবং এই তেলগুলি নিয়মিত ম্যাসাজ করলে আপনার মাথায় নতুন চুল গজাবে এবং খুব সহজেই চুল ঘন হয়ে উঠবে।

১. আদার তেল

আদার তেল বাজারেও কিনতে পাওয়া যায়। কিন্তু যখন বাড়িতেই আপনি আদার তেল বানাতে পারবেন তখন খামোখা কিনবেন কেন? আদার তেল কিন্তু চুলের গোছ বাড়ানোর জন্য খুব উপকারী। আমাদের চুল গোড়া থেকে পাতলা হয়ে গেলে সমানে পড়তে শুরু করে। আদার তেল চুলের গোড়া মজবুত করে এবং নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করে।

উপকরণ

২০০ গ্রাম নারকেল তেল, ৫০ গ্রাম আদা, ২-৩ বড় চামচ অলিভ অয়েল (চাইলে নাও দিতে পারেন)।

পদ্ধতি

আদা চুলে ভালো করে ধুয়ে ছোটো টুকরো করে কেটে একটু থেঁতলে নিন। এবার একটি পাত্রে নারকেল তেল গরম করুন। আদার টুকরোগুলি ওতে দিয়ে দিন। খুব কম আঁচে ২০-২৫ মিনিট ধরে তেল নাড়তে থাকুন। এতে আদার সম্পূর্ণ রস তেলের সাথে মিশে যাবে। ২৫ মিনিট পর গ্যাস বন্ধ করুন। ঠান্ডা হয়ে গেলে একটি পাত্রে ছেঁকে নিন। এবার তার সাথে অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। প্রতিদিন রাতে শোবার আগে এই তেল আপনার স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করুন। সকালে শ্যাম্পু করে নিন। ১ মাসের মধ্যেই আপনার মাথা চুলে ভরে যাবে।

২. জবা ফুলের তেল

জবা ফুল আমাদের চুলের জন্য ‘মায়ের আশীর্বাদ’ বলতে পারেন। এই ফুলের তেল মাথায় লাগালে চুল পড়া চিরতরে বন্ধ হবে এবং খুব তাড়াতাড়ি নতুন চুল গজাতে শুরু করবে। ঘন কালো একগুচ্ছ চুলের জন্য চটপট বানিয়ে ফেলুন জবা ফুলের তেল।

উপকরণঃ-

লাল জবা ফুল ১২-১৫ টি, কারি পাতা ১ কাপ, নারকেল তেল ৫০০ গ্রাম।

পদ্ধতি

ফুলের পাপড়িগুলি ও কারি পাতা ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে নিন। এবার পাত্রে নারেকেল তেল গরম করে তাতে জবা ফুলের পাপড়ি ও কারি পাতা সাবধানে দিয়ে আঁচ কম করে নাড়তে থাকুন। যাতে পুড়ে না যায়। ১০ মিনিট কম আঁচে নাড়ার পর গ্যাস বন্ধ করুন। তেল ঠান্ডা হয়ে গেলে একটি পাত্রে ছেঁকে রেখে দিন। প্রতিদিন রাতে শোবার আগে ভালো করে ৫ মিনিট ধরে স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করুন।

৩. আমলকী তেল

চুলের ক্ষেত্রে আমলকীর উপকারিতা নতুন করে আর বলার কিছু নেই। তাই পাতলা চুলের সমস্যা থেকে রেহাই পেতে এই তেল অবশ্যই ব্যবহার করুন।

উপকরণ

১ কাপ আমলকী জুস, ১ কাপ নারকেল তেল।

পদ্ধতি

আমলকী ভালো করে ধুয়ে একটি পাত্রে থেঁতো করে বীজগুলি বের করে নিন। এবার মিক্সিতে অল্প জল দিয়ে বেটে, ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে জুস বের করে নিন। এবার একটি পাত্রে নারকেল তেল গরম করে তাতে খুব সাবধানে আমলকীর জুস মেশান। কম আঁচে ৫-৭ মিনিট নাড়লে দেখবেন জল শুকিয়ে গিয়ে তেলের রং বাদামী হয়ে গিয়েছে। এবার গ্যাস বন্ধ করুন। ঠান্ডা হলে একটি বোতলে ঢেলে রাখুন। প্রতিদিন রাতে এই তেল আপনার স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করুন। সকালে আগে হালকা গরম জলে মাথা ধুয়ে তারপর শ্যাম্পু করে ফেলুন।

৪. পেঁয়াজের তেল

পেঁয়াজের রস আমাদের চুল গজানোর ক্ষেত্রে ম্যাজিকের মত কাজ করে। খুব কম সময়েই তাই এই তেল আপনার চুলের ঘনত্ব বাড়াতে সাহায্য করে। শুধু আমি না, যে কোনো ডার্মাটোলজিস্ট কিন্তু তাই বলবেন। তাই পেঁয়াজ এবার থেকে শুধু রান্নার কাজে না লাগিয়ে চুলের খাদ্য হিসেবেও কাজে লাগান।

উপকরণ

২ টি ছোটো পেঁয়াজ, ৪ টি রসুনের কোয়া, ১ কাপ নারকেল তেল।

পদ্ধতি

পেঁয়াজ স্লাইস করে কেটে নিন। রসুনের কোয়াগুলি ছুলে নিন। নারকেল তেল একটি পাত্রে গরম করে তাতে রসুন ও পেঁয়াজের স্লাইসগুলো দিন। এবার কম আঁচে নাড়তে থাকুন। যতক্ষণ না পেঁয়াজ বাদামী রঙের হচ্ছে ততক্ষণ ক্রমাগত তেল নাড়তে থাকুন। ১৫ মিনিট পর গ্যাস বন্ধ করুন। ঠান্ডা হয়ে গেলে একটি পাত্রে বা বোতলে ছেঁকে রাখুন। প্রতিদিন রাতে এই তেল আপনার স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করুন। সকালের আগে হালকা গরম জলে মাথা ধুয়ে তারপর শ্যাম্পু করে ফেলুন।

আমি তো আপনাকে উপায় বলেই দিলাম। কিন্তু আপনার কাজ হলো এর মধ্যে যে কোনো একটি বা দুটি তেল বানিয়ে সেই তেল ব্যবহার করা। সবগুলি ঘরোয়া তেলেই আপনার উপকার হবে। নিয়মিত ব্যবহার করুন, দেখবেন ১ মাসের মাথার চুল সামলাতে আপনি হিমশিম খেয়ে যাচ্ছেন।

Comment এ আপনার মতামত জানাবেন।
এবং আপনার টাইম লাইনে রাখতে চাইলে share করে রাখুন পরে কাজে লাগতে পারে অথবা আপনার ফ্রেন্ডদের উপকারে আস তে পারে।
আমার গুরুত্ব সকল টিপস ও গল্প পেতে চাইলে আমাকে
রিকু বা ফলো দিয়ে রাখুন।
ধন্যবাদ