বাংলা টেলিভিশনের একটি বিরাট অংশ জুড়ে রয়েছে বাংলা সিরিয়াল। দেখা যায় প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই বসে পড়েন টিভির সামনে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় বাংলা ধারাবাহিক গুলোর শুরুটা হয় নায়ক-নায়িকার মালাবদলের মাধ্যমে আর তা না হলেও কয়েকটি পর্ব যেতে না যেতেই চলে আসে মুল চরিত্রের বিয়ের অংশ। এটা যেন নিয়মিত ধারাবাহিকের মতই প্রতিটি ধারাবাহিক গুলোতে ঘটে চলেছে।

 

কয়েকটি রূপকথাকেন্দ্রিক ধারাবাহিকগুলি এবং শিশুকেন্দ্রিক ধারাবাহিকে মূল চরিত্রের বিয়েই হল ক্লাইম্যাক্স। এছাড়া ব্যতিক্রম ‘কিরণমালা’ বা ‘সাত ভাই চম্পার মতো পুরোপুরি রূপকথাকেন্দ্রিক ধারাবাহিকগুলি।

তবে ‘রাশি’, ‘বধূবরণ’ এবং ‘আমার দুর্গা’-র চিত্রনাট্যকার অসিতা ভট্টাচার্যের মতে পরিচালকের অনিচ্ছাসত্ত্বেও অনেক সময় সাততাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়ে দিতে হয় মূল চরিত্রের। প্রশ্ন হল, ‘কেন’?

কারন বাংলা ধারাবাহিকের নায়ক-নায়িকাকে ঘিরে সাংসারিক কূটকচালি, শাশুড়ি-বউমার কাজিয়া, পারিবারিক ষড়যন্ত্র ইত্যাদি সমাজ-সংস্কৃতিকে কলুষিত অবদান রাখলেও সাপ্তাহিক টিআরপি রেটিং তার পুরোটাই ব্যাতিত্রম।

অর্থ্যাৎ নায়ক-নায়িকার প্রেমপর্বের চেয়েও বেশি টিআরপি দেয় বিয়ের পরে শ্বশুরবাড়িতে শাশুড়ি-ননদ-জায়েদের সঙ্গে নতুন বউমার ঠুকঠাক টকঝালমিষ্টি বাক্যবিনিময়।

আশ্চর্যজনক হলেও টিআরপি রেটিং বাড়ার ভুমিকায় রয়েছে এসব ধারাবাহিক। কারণ টিআরপি না থাকলে কমবে বিজ্ঞাপন, অর্থাৎ কমবে আয়।

শ্বশুরবাড়িতে নায়িকা প্রচণ্ড অপদস্থ হলেও রেটিং ভাল থাকে। আর যদি পাকেচক্রে, ঘটনার ফেরে নায়কের আর একটি বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়, তবে তো আর কথাই নেই। ধারাবাহিকের দ্বৈত বিয়ে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া সারাক্ষণ সরগরম থাকলেও আশ্চর্যজনক ভাবে গল্পের ট্র্যাক সেই দিকে এগোলেই রেটিংও বাড়ে চড়চড় করে।

বিষয়টা তাই অনেকটা এখন দুষ্টচক্রের মতো চক্রাকারে আবর্তিত হয়ে চলেছে। এই দুরন্ত ঘূর্ণির থেকে বেরনোর কি কোনও উপায় নেই? প্রশ্ন রইল চ্যানেল কর্তৃপক্ষ ও প্রযোজকদের কাছে। এবং অবশ্যই দর্শকের কাছেও, যাঁদের হাতেই আসলে রয়েছে টিআরপির চাবিকাঠি।