বর্তমানে আমাদের সমাজে এক ব্যাধির রুপ ধারন করেছে পরকীয়া। আশেপাশে চোখ দিলেই দেখা যাচ্ছে এই সমস্যা ও এর প্রভাব। এর ফলে ভেঙ্গে যেতে বসেছে অনেক পরিবার। সম্পর্কের অবনতী সন্তানদের মধ্যে নানা খারাপ প্রভাব ফেলছে। অনেকের মতে সচেতনতাই এই সমস্যার সমাধান। তবে আসুন দেখে নেওয়া যাক কেন মানুষ পরকীয়ায় আসক্ত হয়। 

১। পারিবারিক মূল্যবোধের অবক্ষয়।

২। অতিমাত্রায় বিদেশী সিরিয়াল ও চলচিত্র দেখা।

৩। পরিবারকে সময় না দেওয়া।

৪। সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় বেশী দেওয়া।

৫। যৌথ পরিবার ভেঙ্গে একান্নবর্তি পরিবার গড়া।

৬। ধর্মিয় মূল্যবোধের অবক্ষয় (বিশেষ করে শিশুকালে সন্তানদের ইসলামি চিন্তা চেতনায় বিকশিত হতে না দেওয়া)।

৭। মাঠ ঘাটের পরিবর্তে বিনোদন কেন্দ্রে সময় কাটান ইত্যাদি ইত্যাদি বহুবিধ কারন রয়েছে।

স্ত্রীর উচিত স্বামী যাতে পরকিয়া লিপ্ত না হয়ে পড়ে সেদিকে লক্ষ রাখা এবং প্রতিনিয়ত চেষ্টা করা। এখন জেনে নিন পুরুষেরা পরকিয়ায় লিপ্ত হবার কারণ গুলো কি কি-

০১. স্বামী চাওয়ার প্রতি কোন গুরুত্ব না দেওয়া।

০২. স্বামীর কাজে সাহায্য না করা।

০৩. স্বামীর সাথে ভালো আচরণ না করা।

০৪. স্বামীকে অবহেলা করা।

০৫. অপরিস্কার, অপরিছন্ন থাকা সহ আরো অন্যান্য কারণে আপনি আপনার স্বামী অনাগ্রের শিকার হতে পারেন এবং আপনার স্বামী পরনারী আসক্ত হয়ে পরকিয়ার প্রেমে মজতে পারেন।

এর থেকে আপনার স্বামীকে বাঁচাতে ও আপনার সংসারের সুখ শান্তি বজায় রাখতে নিচের পরামর্শ গুলো ব্যক্তি জীবনে ট্রাই করতে পারেন। বিষয় গুলো আপনার উপকারে আসলে আমার শ্রম সার্থক হবে।

০১. প্রশংসা করাঃ স্বামীর ভালো কাজের প্রশংসা করুণ এবং হারাম ও অবৈধ কাজ থেকে বিরত থাকতে নিরুৎসাহিত করুণ। তাঁকে বলুন যে, আমি তোমাকে আদর্শবান স্বামী হিসেবে দেখতে চায়। আমরা একসাথে জান্নাতে যেতে চাই। পাশা-পাশি তাঁর হাতের সম্পাদিত কাজেরও প্রশংসা করুণ। তিনি কোন হাতের কাজ ঠিক মতো না করতে পারলে ‘তুমি কিছুই পারনা’ এভাবে না বলে বরং বলুন “তুমি কাজটি ভালোই করতে পেরেছো কিন্তু আরেকটু ভালো করার চেষ্টা করো”। এমন কি যৌন মিলনের ক্ষেত্রেও এটি প্রয়োগ করুণ। যেমন, স্বামী যদি আপনাকে মিলনে পরিপূর্ণ আনন্দ দিতে না পারে তাহলে নিরব থাকবেন না কিংবা তাঁকে বলবেন না তুমি আমাকে আনন্দ দিতে পারোনা। এটি এভাবে না বলে বরং বলুন “তুমিকে আজকে আমাকে অনেক আনন্দ দিয়েছো আমি তোমার কাছ থেকে আরো বেশি আনন্দ পেতে চায়”।
০২. খাবার ও পরিবেশনাঃ স্বামীর পছন্দের খাবার রান্না করে খাওয়াতে চেষ্টা করুন। আপনার স্বামী কি ধরণের খাবার খেতে বেশি পছন্দ করেন সেসব খাবারের নাম কৌশলে জেনে নিন। প্রতিদিনকার মতো একই খাবার তৈরি না করে বরং খাবারের মেন্যুতে ভিন্নতা আনার চেষ্টা করুণ। প্রতিদিন না পারেন অত্যন্ত সপ্তাহে দুই একবার চেষ্টা করুণ। স্বামীর সামনে খাবার পরিবেশনের সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দিকে খেয়াল রাখুন। তাঁর সামনে যেন অপরিস্কার খাবারের পাত্র সমূহ না যায়।

০৩. ভালো ব্যবহারঃ স্বামীর সাথে সব সময় ভালো ব্যবহার করুণ। মিষ্টি ভাষায় কথা বলুন। কৌতুক কিংবা মজাদার কথার দ্বারা স্বামীকে আনন্দ দিতে চেষ্টা করুণ। তাঁকে খুশি করে এমন কথা বলুন। তাঁর সাথে কটু ভাষায় কথা বলা পরিহার করুণ। কাজে থেকে কিংবা দূরের কোথাও সফর থেকে ঘরে কিংবা বাসায় ফিরলে তাঁকে হাসিমুখে স্বাগতম জানান। যাতে তিনি বুঝতে পারেন তিনি ফিরে আসাতে আপনি খুশি হয়েছেন।

০৪. পরিষ্কার পরিছন্ন থাকুনঃ স্বামীর সামনে পরিষ্কার পরিছন্ন থাকার চেষ্টা করুণ। কাপড়ে ও গায়ে ময়লা লেগে থাকাবস্থায় স্বামীর সামনে না যেয়ে বরং পরিষ্কার পরিছন্ন হয়ে স্বামীর সামনে নিজেকে পেশ করুণ। ঘুমানোর পূর্বে এটি করা খুবই জরুরী। কেননা, ময়লা কাপড় ও গায়ে ঘামের দুর্গন্ধ স্বামীর মনে অনাগ্রের সৃষ্টি করতে পারে। এর কটু গন্ধের কারণে তিনি আপনার কাছে ঘেঁষতে অসুবিধা বোধ করতে পারে।

০৫. সাজ-সজ্জাঃ স্বামীর সামনে নিজেকে আকর্ষণীয়ভাবে তুলে ধরতে চেষ্টা করুণ। তাঁর সামনে সেজে গুজে হাজির হোন। যাতে তিনি আপনাক রূপ সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হতে পারে। আমাদের দেশের নারীরা উল্টো কাজটি করে থাকে। বাড়িতে কিংবা বাসায় কেউ এলে অথবা কোথায় গেলে তাঁরা এমন ভাবে সাজ্জ-সজ্জা করে বোধ হয় ম্যাকআপ বক্সের রং ও ময়দা সব খালি করে দিয়েছে। কিন্তু স্বামীর বেলায় অনেকে এর ২ আনাও করে না। ফলাফল স্বামীরা ঐ নারীকে দেখে আফসোস করে মনে মনে বলে আমি কেনো আগে এমন রূপসীকে বিয়ে করলাম না।

০৬. যৌন কার্যে সাহায্য করাঃ অনেক স্ত্রী আছে যারা স্বামী যৌন কার্যে দিকে আহ্বান করলে সাড়া দিতে চান না কিংবা রাজি হতে চায় না। অসুস্থ না থাকার সত্ত্বেও নানান টাল-বাহানা করে থাকে। আবার অনেকে রাজি হলেও জীবন্ত লাশের মতো বিছানায় শুয়ে থাকে। স্বামীর আদর সোহাগ নিজে গ্রহণ করলেও স্বামীকে এর প্রতিদান দিতে ইচ্ছুক নয়। সুখী যৌন জীবন গড়তে স্বামীর সাথে এমনটি করা উচিত নয়। স্ত্রীর উচিত স্বামীর যৌন কার্যে আহ্বানে সাড়া দেওয়া এবং তাঁর কাজে অনুরূপ ভাবে সাহায্য করা। স্বামীর যৌন কাজে আপনি কিভাবে ভালোভাবে সাহায্য করবেন তাঁর জন্য আমাদের বিনামূলে দেওয়া নারীদের যৌন জ্ঞান বইটি পড়ুন।
০৭. কাজের ফাঁকে জড়িয়ে ধরাঃ কাজের ফাঁকে কিংবা রুমে ভিতরে দু’জন নির্জনে অবস্থান করার ফাঁকে স্বামীকে পিছন থেকে কিংবা সামনে থেকে জড়িয়ে ধরুন এবং তাঁর সাথে উষ্ণ চুম্বন করুণ। এটিকে পুরুষদেরকে দারুণ পুলকিত করে ও মনে আনন্দের জোয়ার তুলে। প্রত্যেক পুরুষের মনে চাহিদা থাকে যে তাঁর স্ত্রীকে তাঁকে ফাঁকে ফাঁকে জড়িয়ে ধরুক এবং মাঝে মাঝে চুম্বন করুক।

০৮. উপহারঃ স্বামীর দেওয়া উপহার আনন্দে চিত্তে গ্রহণ করুণ। সেটি যতই ক্ষুদ্র হোক না কেন। পাশা-পাশি মাঝে মধ্যে আপনিও তাঁকে উপহার প্রদান করে আনন্দ দিতে পারেন। এগুলো স্বামী স্ত্রীর মনে প্রণোদনা সৃষ্টি করে।

০৯. স্বামীর কাজে সাহায্যঃ আপনার স্বামীর কাজে সাহায্য করুণ। তাঁর অফিসের কাপড়-চোপড় এগিয়ে দিন। তাঁর এটা সেটা এগিয়ে দিন। ময়লা কাপড় গুলো ধুয়ে পরিষ্কার করে রাখুন প্রয়োজনে তাঁকে জিজ্ঞাসা করুণ কোন কোন কাপড় গুলো ধুয়ে পরিষ্কার করে রাখতে হবে।

১০. খোঁজ খবরঃ স্বামীর কাজের খোঁজ খবর নিন। তিনি কোথায় সফর যাচ্ছে সেখানে ঠিক-ঠাক মতো পৌঁছেছেন কি না, যেকাজের উদ্দেশ্য বের হয়ে হয়েছেন সে কাজ সফল হয়েছে কিনা, অফিসে সকালের নাস্তা, দুপুরের কিংবা রাতের খাবার ঠিকঠাক মতো খেয়েছেন কিনা ফোন করে খোঁজ খবর নিন।