24 Live Bangla News

ভুল করে সিরিয়ালে এসেছেন খোকাবাবু!

আপনার কেরিয়ারের শুরু কি ফিল্ম দিয়েই?
হরনাথ চক্রবর্তীর কমার্শিয়াল ছবি দিয়ে শুরু করেছিলাম। ২০১৩ সালে। তারপর বাপ্পাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সোহরা ব্রিজ’এ কাজ করেছি। আমি আর নীহারিকা সিংহ ছিলাম। এছাড়াও আরও সাত-আটটা ছবি করে ফেলেছি প্রায়।

তরুণ মজুমদারের ছবিতে সুযোগ পেলেন কীভাবে?
‘খোকাবাবু’ ধারাবাহিক শুরু হওয়ার আগে কাজ করেছিলাম ‘ভালবাসার বাড়ি’তে। তরুণ মজুমদার প্রথমেই জিগ্যেস করেছিলেন, কবিতা বলতে পারি কি না! আমি নিজেরই একটা কবিতা শুনিয়েছিলাম। ওঁর ভাল লাগায় একটা ৪০০ পাতার স্ক্রিপ্ট দিয়ে বলেছিলেন, ১৯দিনের মধ্যে মুখস্থ করতে হবে। তার মধ্যে আবার বড় বড় কবিতা ছিল। যেমন ওঁর ‘দাদার কীর্তি’ বা ‘ভালবাসা ভালবাসা’তে ছিল। স্ক্রিপ্টটা দিয়ে উনি বলেছিলেন, ‘যেখান থেকে জিগ্যেস করব, জবাব দিতে হবে কিন্তু’!

 ইন্ডাস্ট্রিতে আপনাকে নবাগতই বলা যায়। কেরিয়ারের শুরুতেই তরুণ মজুমদারের ছবি। নায়িকা ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত...।
এই নাম দু’টোর সঙ্গে কাজ করার চাপটা আমার প্রথম থেকেই ছিল। আমাদের বয়সের ফারাক থাকা সত্ত্বেও ছবিতে কিন্তু আমাদের অসমবয়সি জুটি হিসেবে দেখানো হয়নি। ওঁর মতো একজন নায়িকার পাশে আমি কতটা মানানসই হতে পারব, সেটা আমার কাছে চ্যালেঞ্জ ছিলই। কিন্তু কাজটা অনেক সহজ করে দিয়েছিলেন পরিচালক এবং ঋতুদি নিজেই।

কখনও মনে হয়েছে নামী শিল্পীরা আপনাকে ছাপিয়ে যাচ্ছেন?
ঋতুদি খুব হেল্পফুল। আমায় কখনও বুঝতেই দেয়নি যে, একজন সুপারস্টারের সঙ্গে কাজ করছি। আর তরুণবাবু তো পারফেকশন ছাড়া কাজ করেন না। কাজেই আমাকে দিয়ে ঠিক আদায় করিয়ে নিয়েছেন। এই ছবিতে দ্বিজেন বন্দ্যোপাধ্যায়ও ছিলেন একটা গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে। ওঁকে আমরা অসম্ভব মিস্‌ করছি এখন। এই ছবিটা করতে গিয়ে সকলের কাছ থেকেই কমবেশি শিখেছি আমি।

ছবি করতে করতে ধারাবাহিকে যোগ দিলেন কেন?
শেষ পাঁচ-সাত বছর ধরে আমার কাছে প্রচুর ধারাবাহিকের প্রস্তাব আসছিল। ‘ইচ্ছেনদী’, ‘পটলকুমার গানওয়ালা’র মতো সিরিয়ালের প্রস্তাবও ফিরিয়ে দিয়েছি। কারণ তখন আমি ভাবতাম, ধারাবাহিকে কাজ করব না কখনও। কারণ সেখানে অভিনেতাদের সঙ্গে সুবিচার করা হয় না। ইদানীং বেশিরভাগ ধারাবাহিকই নায়িকাকেন্দ্রিক, যেখানে পুরুষ চরিত্রগুলোর কোনও প্রাধান্য থাকে না।

নায়িকাকেন্দ্রিক সিরিয়ালে আপত্তি আছে?
আপত্তি নেই। আমি গল্পে বিশ্বাস করি। বেশিরভাগ ধারাবাহিকে সমসময়কে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়। নারী ক্ষমতায়নের সময়েও যেভাবে এখন মহিলাদের উপর অত্যাচার বাড়ছে, সেখানে মেয়েদের গল্প বেশি করে বলাই উচিত। তবে যেখানে অভিনেতা হিসেবে আমার কিছু করার জায়গা থাকবে, একটু অন্য রকম কিছু— তেমন স্ক্রিপ্টই বাছব আমি।

তাহলে ‘খোকাবাবু’ করতে রাজি হলেন কেন?
গল্পটা বেশ ভাল লেগেছিল। দেখলাম, অনেক রকমের চরিত্র করার সুযোগ পাব। এখন যেমন কান্তাবাঈ করে প্রচুর প্রশংসা পাচ্ছি! আই ক্যান এনজয় মাইসেল্‌ফ।

কান্তাবাঈয়ের চরিত্রটা কতটা চ্যালেঞ্জিং ছিল?
পরিচালক আমায় বলেই দিয়েছিলেন, কান্তাবাঈ হবে বোল্ড, সব কথা মুখের উপর বলে দিতে পারে। খোকাবাবু যদি খুকি হয়ে যায় যেমন হবে, তেমনভাবেই অভিনয় করতে হবে। কোনও হোমওয়ার্ক ছিল না আমার। যেদিন প্রথম কান্তাবাঈ সাজলাম, আপনা থেকেই অভিনয়টা চলে এল। আমি অনেক রকম গলাও করতে পারি!

এরপর কী? ধারাবাহিক আর ছবিতে একসঙ্গে কাজ চালিয়ে যাওয়া তো মুশকিল...।
একটার জন্য তো আরেকটা ছাড়তেই হয়। সিরিয়ালে সেট’এ একবার ঢুকলে অন্তত ১৪-১৫ ঘণ্টা থাকতে হয়। সেটার পর ছবি বা অন্য কোনও কিছুর জন্য সময় বার করা প্রায় অসম্ভব। এরপর ছবিই করতে চাই। তবে ভবিষ্যতে পরিচালনার ইচ্ছে রয়েছে। তিনটে স্ক্রিপ্ট রেডি আছে আমার। তবে আমার মনে হয় আমি ভুল করে এই লাইনে এসে পড়েছি।

সে কী!
আমার দাদু ছিলেন বিজলীবরণ সেন। যিনি ছবি বিশ্বাস, পাহাড়ী সান্যাল, শম্ভু মিত্রকে নিয়ে ‘মানিক’ (১৯৬১) বানিয়েছিলেন। সেই পরিবারের ছেলে হয়ে আমি প্রথমে গিয়েছিলাম রেলে চাকরি করতে। স্পোর্টস কোটায় চাকরি পেয়েছিলাম। জাতীয় স্তরে বক্সিংয়ে পুরস্কার রয়েছে আমার। ন’মাস চাকরি করার পর বুঝেছিলাম, আমার দ্বারা দশটা-পাঁচটার চাকরি হবে না। এদিকে ফিল্ম লাইনও ভাল লাগত না। এখন অবশ্য একটু একটু করে ভালবাসা জন্মেছে।

 ‘চল কুন্তল’ ছবিটায় আপনি ছিলেন। মেট্রো স্টেশনে টাইটেল ট্র্যাকটা শুনতে শুনতে তো মানুষ রীতিমতো জেরবার...!
এটা নিয়ে মিম আর জোক্‌স পর্যন্ত তৈরি হয়ে গিয়েছে। কলকাতা মেট্রো মানেই ‘চল কুন্তল’! আমার বন্ধুরা তো রীতিমতো খ্যাপাতো। ‘খোকাবাবু’র সেট’এও এই নিয়ে প্রায়ই শুনতে হতো। যদিও ছবিটা থেকে ভালই সাড়া পাওয়া গিয়েছে, তা-ও যে কোনও জিনিস একটানা প্রচার করলে তো একঘেয়ে লাগবেই। এক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে আর কী!

খবর - এবেলা ডট ইন

Read More Bangla News